বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বেগমপাড়ার বাড়ির মালিকদের তালিকা পাচ্ছি না

দুদক চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বারবার চেয়েও কারও কাছ থেকে কানাডার বেগমপাড়ায় সম্পদ গড়া প্রবাসী বাংলাদেশির তালিকা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। কানাডার বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশিদের অবৈধ সম্পদের টাকায় গড়ে উঠেছে অভিজাত পল্লী। যা বেগমপাড়া নামেই পরিচিত। অর্থ পাচারকারীদের বেশির ভাগই আমলা, রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী। অর্থ পাচারকারীদের তালিকা ও তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে স্বপ্রণোদিত হয়ে ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর রুল জারি করেছিল উচ্চ আদালত। সে সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, কারা কানাডায় সম্পদ গড়েছেন তাদের কাছে তালিকা আছে। সে বছরই বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার করে সম্পদ বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়া বাংলাদেশিদের তালিকা চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় দুদক। তালিকার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কানাডার বেগমপাড়ার দুর্নীতিবাজদের লিস্ট আমরা পাইনি, পাওয়ার কোনো মেকানিজম আমাদের নেই। বেগমপাড়ায় কার কার বাড়ি আছে ওই তালিকা পাওয়ার মেকানিজম আমাদের নেই। মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, উনার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) কাছে তালিকা আছে, বারবার চাওয়ার পরও তো পাচ্ছি না। আমরা কীভাবে এগোব। যেগুলো পেয়েছি সেগুলোর ওপর কাজ করছি। তিনি বলেন, মানিলন্ডারিংয়ের তথ্য কোনো দেশ দিতে চায় না। কারণ টাকা সেই দেশে যাচ্ছে আর টাকাগুলো রাখার জন্যই তারা তথ্য দিচ্ছে না। বলছে, মামলা হলে তথ্য দেবে, কিন্তু মামলা করার জন্যই তথ্য দরকার। কোনো দেশই দিচ্ছে না। এ প্রতিকূলতা নিয়ে আমরা কাজ করছি। তিনি বলেছেন, আজকে ঘুমাতে যাবেন, কাল দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে, এমনটা সম্ভব না। দুর্নীতি দমনে দুদক ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছে। বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী এ সংস্থার প্রকাশ করা দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২১-এ এ তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। প্রতিবেদনের তথ্য দুদক আমলে নেবে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এটা দেখব যাচাই করে। যদি আমাদের কাজের কোনো সুপারিশ থাকে, সেগুলো বাস্তবসম্মত হলে ভবিষ্যতের উন্নতির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেব। দুর্নীতি বন্ধে ২২টা মন্ত্রণালয়ে আমরা সুপারিশ করেছি। সেগুলো মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে কি না সে এক্সিকিউটিভ ক্ষমতা আমাদের নেই। সেটা তাদের বিষয়। দুর্নীতির ব্যাপারে নমনীয় বা জিরো টলারেন্স এটা দেখানোয় দুদকের কোনো সুযোগ নেই। এটার একমাত্র কাজ দুর্নীতি দমন। পৃথিবীর সব দেশেই দুর্নীতি আছে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির ধারণাই পাল্টে যাচ্ছে। এ জন্য আমাদের প্রশিক্ষিত লোকবল দরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর