সপ্তম ধাপে ১৩৮ ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন আজ। দেশের ২০ জেলার ২৪টি উপজেলায় এসব ইউপিতে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। এ ধাপে ১৩৮টি ইউপির মধ্যে মাত্র নয়টিতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হবে। অন্যগুলোতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট হবে।
এদিকে ভোট সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মাঠে রয়েছেন পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। বিগত ছয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে-পরে ব্যাপক সংঘাত-সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় আজকের ভোট নিয়ে শঙ্কা-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন ভোটার ও প্রার্থীরা। এ ধাপের নির্বাচনে পাঁচ হাজার ৮৭৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণাকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সহিংসতা ঘটছে। অনেক এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্ক কাজ করছে ভোটারদের মধ্যে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে ১২৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গতকাল ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল পাঠিয়েছে ইসি। শনিবার মধ্যরাতে এসব নির্বাচনী এলাকায় প্রচারের সময় শেষ হয়েছে। নির্বাচনী প্রচার শেষ দিনে বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত-সহিংসতা হয়েছে, প্রাণ হারিয়েছেন একজন। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের পরেও তারা থাকবেন। সেইসঙ্গে মাঠে রয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেটও। নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের যুগ্মসচিব আসাদুজ্জামান বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ৭১ জন।এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন ১১ জন। এছাড়াও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ইসির নির্বাচন কমিশন শাখা জানায়, এ ধাপে পাঁচ হাজার ৮৭৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭৬ জন প্রার্থী। সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রার্থী এক হাজার ২৩৬ জন। এছাড়াও সাধারণ সদস্য পদে চার হাজার ৬২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ধাপের নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র এক হাজার ৩৫০টি, ভোটকক্ষ সাত হাজার ৮৫টি। ইউপি নির্বাচনের এ ধাপে (সপ্তম ধাপে) ২৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৮২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৮৬ জন, নারী ১১ লাখ ৯৪ হাজার ২২৯ জন। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন তিনজন। এ ধাপের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে একটি মোবাইল টিম থাকবে। প্রতি তিনটি ইউনিয়নে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে একটি করে। প্রতিটি উপজেলায় র্যাবের মোবাইল টিম দুটি ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। আর প্রতিটি উপজেলা বিজিবির মোবাইল টিম দুটি ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতিটি উপকূলীয় উপজেলায় কোস্ট গার্ডের মোবাইল টিম দুটি (দুই প্লাটুন), স্ট্রাইকিং ফোর্স একটি (এক প্লাটুন) থাকবে। ইতোমধ্যে ছয় ধাপের ইউপি নির্বাচন শেষ হয়েছে। গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপের দুই দফায় ৩৬৯টি এবং ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে এক হাজার ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর ৮৩৬ ইউপিতে ভোট হয়েছে। ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ৭০৮টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়। এরপর ষষ্ঠ ধাপে ২১৬ ইউপিতে ৩১ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ করা হয়। আর অষ্টম ধাপে আটটি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট নেওয়া হবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি।