ভালো নেই জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের বাম পা কাজ করছে না। এ জন্য চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে। দেশে-বিদেশে টানা প্রায় ছয় মাস হাসপাতালে থাকায় তিনি বাসায় ফিরতে চাইছেন। এদিকে গত বছরের ৫ নভেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিরোধী দলের নেতাকে থাইল্যান্ডে নেওয়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে সশরীরে খোঁজ নেওয়ার জন্য সেখানে গেছেন এইচ এম এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ। জানতে চাইলে কাজী মামুনুর রশীদ বামরুনগ্রাদ হাসপাতাল থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সাদ এরশাদের মাধ্যমে নিয়মিত ফোনে ম্যাডামের (রওশন) খোঁজখবর নিতাম। শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে শনিবার সস্ত্রীক থাইল্যান্ডে এসেছেন। কাজী মামুন বলেন, ম্যাডামের সঙ্গে কথা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। কাজী মামুনের স্ত্রী স্বপ্না বেগম জানান, ম্যাডাম তার কাছে বাসায় যাওয়ার কথা বলেছেন। কবে বাসায় যাবেন জানতে চেয়েছেন। হাসপাতালে আর তিনি থাকতে চাইছেন না। আজই (গতকাল) তিনি বাসায় যেতে চান। জানা যায়, ফুসফুস জটিলতায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন গত বছরের ১৪ আগস্ট। প্রায় আড়াই মাস চিকিৎসাধীন থাকাকালে কিছুদিন ছিলেন আইসিইউতে। পরে গত বছরের ৫ নভেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। গত তিন মাস সেখানে চিকিৎসাধীন ৭৮ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ। দিন দিন তার শরীরে বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। অধিকাংশ সময় তাকে আইসিইউতে থাকতে হচ্ছে। জাতীয় পার্টির রওশন অনুসারী নেতা-কর্মীরা বলছেন, পার্টির পক্ষ থেকে সঠিকভাবে তার খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে না। তারা বলেন, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- বেগম রওশন এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদ তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করেন না। ফোন রিসিভ করেন না। ফোন রিসিভ না করলে জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীলদের উচিত সশরীরে থাইল্যান্ডে যাওয়া। বিরোধী দলের নেতার শারীরিক সব শেষ অবস্থা দেশবাসী জানতে চায়। তারা বলেন, এক সময় রওশন এরশাদের পাশে অনেককে দেখেছি। তারা এমপি, মন্ত্রী হয়েছেন। এখন তাকে দেখতে যাওয়ার কারও সময় হয় না। এটা মেনে নেওয়া যায় না। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ব্যাংককে অবস্থানরত সাদ এরশাদ আমাদের কিছুই জানান না। আবার ফোন দিলেও রিসিভ করেন না। সাদ এরশাদ জানান, তার মায়ের বাম পা কাজ করছে না। এ জন্য চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে কেউ খোঁজখবর নিচ্ছেন না। এটা দুঃখজনক। ফোন রিসিভ না করা প্রসঙ্গে বলেন, হাসপাতালে মাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকি। রিসিভ করতে না পারলে পরে ফোন ব্যাক করি। তাছাড়া কেউ যদি নিজের নম্বর থেকে ফোন না দিয়ে অফিস থেকে ফোন করেন তাহলে ব্যাক করেও আর তাকে পাওয়া যায় না। তিনি জানান, কাজী মামুন তার স্ত্রীকে নিয়ে মাকে দেখতে এসেছেন- এ জন্য খুব ভালো লাগছে। তার মায়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন। উল্লেখ্য, রওশন এরশাদ ফুসফুসের জটিলতা, ব্লাড প্রেসার, বার্ধক্যজনিতসহ নানা রোগে আক্রান্ত। তিনি ময়মনসিংহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি সংসদে গত দুই মেয়াদে বিরোধী দলের নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছেন।