বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
পি কে হালদারের অর্থ কেলেঙ্কারি

ঋণের নামে টাকা লোপাট, দুদকের তিন মামলায় আসামি ৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে বিদেশে পলাতক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার এবং এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও এমডি এবং মেসার্স বর্ণ-এর মালিক অনঙ্গ মোহন রায়সহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলা তিনটি করা হয়েছে। প্রথম মামলায় ২২, দ্বিতীয় মামলায় ১৩ ও তৃতীয় মামলায় ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রথম মামলার আসামিরা হলেন- রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার), হাল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সুস্মিতা সাহা ও এমডি মৈত্রেয়ী রানী বেপারী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক মো. আবুল শাহজাহান, কাজী মাহজাবিন মমতাজ, মাহফুজা রহমান বেবী, সোমা ঘোষ, ডা. উদ্দাব মল্লিক, অরুণ কুমার কুন্ডু, প্রদীপ কুমার নন্দী, এফএএস ফাইন্যান্সের স্বতন্ত্র পরিচালক বীরেন্দ্র কুমার সোম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল হক গাঙ্গী, সিনিয়র অফিসার মৌসুমী পাল, ম্যানেজার আহসান রাকিব, সাবেক সিনিয়র অফিসার তাসনিয়া তাহসিন রোজালিন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মীর ইমাদুল হক, সাবেক ডিপি মো. মনিরুজ্জামান আকন্দ, সাবেক এসভিপি মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া এবং সাবেক এসইভিপি ও সিএডির প্রধান প্রাণ গৌরাঙ্গ দে।

প্রথম মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির আশ্রয়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান হাল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ঋণ হিসেবে ৩০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করে উত্তোলন ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আত্মসাৎ করা অর্থ পরবর্তীতে বিভিন্ন লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলার আসামিরা হলেন- পি কে হালদার, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাসুদেব ব্যানার্জি, পরিচালক মো. নওশেরুল ইসলাম, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক কাজী মাহজাবিন মমতাজ, পরিচালক মো. আবুল শাহজাহান, ডা. উদ্দাব মল্লিক, প্রদীপ কুমার নন্দী, অঞ্জন কুমার রায়, অরুণ কুমার কুন্ডু, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জ্বল কুমার নন্দী, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান মেরিন ট্রাস্ট লিমিটেডের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ঋণ হিসেবে ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিং অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তৃতীয় মামলার অন্য আসামিরা হলেন- কাগুজে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেসার্স বর্ণ-এর মালিক অনঙ্গ মোহন রায়, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক এম এ হাফিজ, অরুণ কুমার কুন্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জ্বল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার, সহকারী ব্যবস্থাপক নিয়াজ আহমেদ ফারুকী ও (১৩) দীপক কুমার চক্রবর্তী। তারা অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক প্রতারণার মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে অসম্পূর্ণ ঋণ আবেদন যাচাই-বাছাই ও কোনো মর্টগেজ গ্রহণ ছাড়াই এবং ঋণগ্রহীতা কাগুজে প্রতিষ্ঠান বর্ণ-এর প্রোপ্রাইটর অনঙ্গ মোহন রায়কে ভুয়া ঋণ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন এবং সুবিধাভোগীরা এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৩৮ কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন ও পরবর্তীতে বিভিন্ন লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে ভুয়া কোম্পানি, বিভিন্ন ব্যক্তির হিসাবে ওই টাকা স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপনপূর্বক পাচার করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর