বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

আবারও রক্তাক্ত পাহাড়

রাঙামাটিতে এমএনপি-জেএসএসের বন্দুকযুদ্ধে নিহত ৪, আহত ২

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

আবারও রক্তাক্ত পাহাড়

পাহাড়ে পড়ে আছে একজনের লাশ (বাঁয়ে)। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় অস্ত্রও -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আবারও রক্তাক্ত হলো পাহাড়ি জনপদ। পার্বত্য জেলা রাঙামাটির দুর্গম রাজস্থলীতে আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও মগ লিবারেশন পার্টির (এমএলপি) দুই গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম অং থোয়াই মারমা (৪৫)। তিনি মগ লিবারেশন পার্টির পরিচালক বলে জানা গেছে। এ সময় আহত হন আরও দুজন। গতকাল সকালে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার ৩ নম্বর গাইন্দ্যা ইউনিয়নের পাইন্দ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। তবে আহত ও বাকি তিন নিহতের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

বর্তমানে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করা  হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে সম্মত হননি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি নেতারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, পাইন্দ পাড়ায় পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেএসএস ও এমএলপির সশস্ত্র সদস্যদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ ঘটে। উভয় পক্ষের মধ্যে চলে ঘণ্টাব্যাপী গুলিবিনিময়। এ সময় ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন চারজন। আহত হন আরও দুজন। তবে তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। গোলাগুলির খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান সেনা সদস্যরা। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দুই গ্রুপের সদস্যরা গহিন জঙ্গলে পালিয়ে যায়। তবে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুচিং মং মারমা জানান, ঘটনাটি রাঙামাটি-বান্দরবান সীমান্তবর্তী এলাকার পাইন্দ পাড়ায়। ওখানে কোনো মানুষের বসতি নেই। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আনাগোনা থাকায় ওই এলাকার আশপাশে যে গ্রাম আছে সেখানেও ভয়ে কেউ বসবাস করতে চাইত না। জনপ্রতিনিধিদেরও সেনাবাহিনী ও পুলিশের নিরাপত্তায় থাকতে হয়। কারণ ওখানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অশান্তি লেগে থাকে। তাই যারা নিহত হয়েছেন তাদের নাম-পরিচয় আমরা জানতে পারিনি। তবে ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার মো. মীর মোদদাছছের হোসেন বলেন, যে এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে সেটি খুবই দুর্গম। পায়ে হেঁটে যেতে হয়। তাই লাশ উদ্ধারে সময় লাগবে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেছে। উদ্ধার অভিযান চলছে। লাশ উদ্ধারের পর বিস্তারিত জানা যাবে। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, তিন পার্বত্য জেলায় চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আঞ্চলিক সংগঠনের সশস্ত্র কর্মীদের মধ্যে হানাহানি লেগেই রয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় একজন সেনা সদস্য ও তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এ ঘটনার এক মাস পরই ৫ মার্চ বান্দরবানের রোয়াংছড়ি-রুমা সীমান্তের পালংক্ষ্যং এলাকায় দুই সশস্ত্র গ্রুপের গোলাগুলিতে নিহত চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর