শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
কী হচ্ছে দুই দেশে

শ্রীলঙ্কায় মন্ত্রিসভা গভর্নরের পদত্যাগ ঐক্য সরকার গঠনের আহ্বান

প্রতিদিন ডেস্ক

শ্রীলঙ্কায় মন্ত্রিসভা গভর্নরের পদত্যাগ ঐক্য সরকার গঠনের আহ্বান

মাহিন্দা রাজাপক্ষে

অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে কার্যত অচল হয়ে পড়া শ্রীলঙ্কায় মন্ত্রিসভার সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্য তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অজিথ নিভারদ কাবরাল। পরে বিরোধীদের সরকারে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। রবিবার রাতে মন্ত্রিসভার পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে এই আহ্বান জানালেন তিনি।

ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অজিথ নিভারদ কাবরাল। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, দেশটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের  মুখোমুখি হওয়ায় গভর্নর হিসেবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। গত বছরের ১৬ নভেম্বর তিনি শ্রীলঙ্কার ১৬তম গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তার আগে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার জেরে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্যই তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেন। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। এর জেরে রাস্তায় নেমেছে জনগণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে কারফিউ জারি করেও লাভ হয়নি। কারফিউ উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে সাধারণ মানুষ। বিরোধীরাও সেই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন। এর মধ্যেই বিরোধীদেরও সরকারে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানালেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। এই আহ্বানে তারা সাড়া দেবেন কি না, তা এখনো জানায়নি বিরোধীরা। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর জারি করা হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। তবে ১৩ ঘণ্টা পর তা প্রত্যাহার করা হয়। মূল্যস্ফীতিতে নাজেহাল মানুষের রোষের মুখে রবিবার মধ্যরাতে পদত্যাগ করেন ২৬ জন মন্ত্রী। যদিও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে এখনো ক্ষমতায় রয়েছেন। অপরদিকে পদত্যাগ করা মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র মাহিন্দা রাজাপক্ষে গ্রহণ করবেন কি না, তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। তবে বিরোধীদের সরকারে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানোর ফলে নতুন করে মন্ত্রিসভা গঠিত হবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বেশ কিছু দিন ধরেই শ্রীলঙ্কার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে জনসাধারণ। সেই বিক্ষোভ হিংসাত্মক রূপও ধারণ করেছে। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্ট করা হচ্ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই আবহে ‘ভুয়া খবর’ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, ইউটিউবসহ যাবতীয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় শ্রীলঙ্কায়। এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে তার বিরুদ্ধে সরব হন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের ছেলে তথা মন্ত্রিসভার সদস্য নমল রাজাপক্ষে। তিনি নিজেও গত রাতে পদত্যাগ করেন।

বৈদেশিক মুদ্রা সংকট এবং আমদানির জন্য অর্থের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে শ্রীলঙ্কায়। দিনের অর্ধেক বা তারও বেশি সময় চলছে লোডশেডিং, খাবার, ওষুধ এবং জ্বালানি সংকটে মানুষের ক্ষোভ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের আগে শ্রীলঙ্কার এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি।

সর্বশেষ খবর