ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এখনকার পৃথিবী একক কোনো মেরুমুখী নয়, পৃথিবী এখন বহু মেরুমুখী। তাই বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ এখন চাইবে সবার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার। সেখানে কোনো দেশ যদি আগ বাড়িয়ে ঝামেলা করতে চায়, তখন বাংলাদেশ স্বাভাবিকভাবেই খুব একটা খুশি থাকবে না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক সবসময়ই ওঠানামা করে। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক খারাপ অবস্থায় চলে গেছে।
এখন আসলে সে অবস্থায় যাওয়ার কাঠামোই নেই। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন বহুমাত্রিক। বিভিন্ন লেভেলে সম্পর্ক আছে। আর সম্পর্কের ওঠানামা শুধু যে বাংলাদেশের সঙ্গে হয়েছে তা নয়, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক হোঁচট খেয়েছে আরও বড় আকারে। ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে জাতিসংঘ বা কেউ বিভিন্ন দেশের মানবাধিকারের বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব দেয়নি। বাংলাদেশও দেয়নি, যুক্তরাষ্ট্রও দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এটাকে তার এখতিয়ারে নিয়েছে। কেন নিয়েছে তাও কেউ জানে না। তাই তাদের এ প্রতিবেদনকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়ার কিছু আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ তাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও খারাপ। জাতিসংঘ বা কেউ যদি তাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করে তাহলে আরও খারাপ চিত্র উঠে আসবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন ধরনের কথা বলেছেন। সম্পর্কের ক্ষেত্রে এমন কথাবার্তা থাকতেই পারে। তার মানে কিন্তু সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাওয়া নয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই বিশ্লেষক বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিতে যখন বলা হচ্ছে, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, তার মানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও বন্ধুত্ব। এটা নয় যে, যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে অন্যদের সঙ্গে বন্ধুত্ব। আবার এমনও নয় যুক্তরাষ্ট্রের যারা শত্রু তারা আমাদের শত্রু হয়ে যাবে বা যাচ্ছে। বাংলাদেশ এসব বিষয়ে কখনোই উৎসাহী ছিল না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৫০ বছরের সম্পর্কে এ ধরনের ওঠানামা আসলে নতুন কিছু নয়। খোঁজ করলে আগেও এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে। ড. ইমতিয়াজ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও ভালোভাবেই জানে বাংলাদেশ আর সে অবস্থায় নেই যে, শুধু একটা দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে হবে।