পুলিশি বাধা ও সরকারি দলের সমর্থকদের হামলা উপেক্ষা করে গতকালও দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিএনপি। হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সমাবেশ পন্ডের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মাগুরায় সাংবাদিকসহ পাঁচ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এর মধ্যে তিনজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মাগুরায় প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুকের হাত থেকে পুলিশ মাইক কেড়ে নেওয়ায় সমাবেশ পন্ড হয়ে যায়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা-মামলা, গ্রেফতার ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিভিন্ন জেলায় দ্বিতীয় দিনের মতো এসব সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
মাগুরা : পুলিশি বাধা, হামলা, সংঘর্ষ ও চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনায় মাগুরা জেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ পন্ড হয়ে গেছে। এ সময় সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পাঁচ নেতা। গতকাল বেলা ১২টায় শহরের ইসলামপুরপাড়ার দলীয় কার্যালয়ে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদের সভাপতিত্বে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শুরু হলেও প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বক্তৃতাকালে মাইক ব্যবহারের পূর্বানুমতি না থাকার অজুহাতে পুলিশ তার ব্যবহৃত মাইকটি বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। পুলিশি হামলায় সমাবেশ প- হয়ে যায় বলে অভিযোগ করে বিএনপি। এতে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ওয়াসিকুর রহমান কল্লোল ও সদর উপজেলা আহ্বায়ক সৈয়দ কুতুবউদ্দিন রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক জেলা আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রানা আহত হন। এ ছাড়া আহত হন আজকের পত্রিকার মাগুরা প্রতিনিধি ফয়সাল পারভেজ। আহতদের মধ্যে যুবদলের ওয়াসিকুর রহমান কল্লোল মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ফরিদপুর : বেলা সাড়ে ১১টায় স্থানীয় কোর্ট চত্বর এলাকায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন প্রমুখ।ময়মনসিংহ : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আমরা প্রতিবেশীর বন্ধুত্ব চাই। সৎ বন্ধু চাই। কিন্তু কর্তৃত্ব মানব না। কে সরকারে থাকবে, কে আসবে, তা ঠিক করবে দেশের জনগণ।’ সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা সিদ্ধান্ত নিন, দেশের মানুষের সঙ্গে থাকবেন, নাকি লুটতরাজের সঙ্গে থাকবেন। মানুষের চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। দেশটা কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়।’ গতকাল ময়মনসিংহ নগরীর হরিকিশোর রায় রোডের বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সহযোগিতার জন্য গণতান্ত্রিক বিশ্বের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ইভিএম দিয়ে লাভ কী? আমরা আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করব না এবং সে ধরনের নির্বাচন হতে দেব না। কাজেই এখনই সময় ঘুরে দাঁড়ানোর।’ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন নগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক শেখ আমজাদ আলী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু ও উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়ারেস আলী মামুন। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আকতারুজ্জামান বাচ্চু, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ার, শাহ নুরুল কবীর শাহীন, আবুল বাসার আকন্দ, আলমগীর মাহমুদ আলম, ফখরুদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চু, অ্যাডভোকেট ফাত্তাহ খান, শাহ শিব্বির আহমেদ ভুলু, অ্যাডভোকেট এম এ হান্নান খান, দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক লিটন আকন্দ প্রমুখ।