সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

কে হচ্ছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট, নির্বাচন নিয়ে নিরাপত্তাবলয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকটের জেরে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভ গতকাল ১০০তম দিনে পৌঁছায়। দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। এমপিদের সমর্থন লাভের চেষ্টায় তৎপর প্রার্থীরা। বিক্ষোভকারীরাও তাকিয়ে আছেন এমপিরা কাকে প্রেসিডেন্ট বানান তা দেখার জন্য। প্রেসিডেন্ট মন মতো না হলে আবারও দেশটি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে পার্লামেন্টের নিরাপত্তায় আজ থেকেই রাজধানীতে অতিরিক্ত সৈন্য জড়ো করা হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কার এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গতকাল টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আগামী ২০ জুলাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন যে  কোনো সহিংস পরিস্থিতি মোকাবিলা ও পার্লামেন্টের নিরাপত্তায় আজই অতিরিক্ত পুলিশ ও সামরিক সদস্য রাজধানীতে আনা হবে।

২০ জুলাই শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটাভুটি হবে। ভোট দেবেন এমপিরা। প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে আগ্রহীদের ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলের নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে তার বিরোধিতাকারী এমপিদের সমর্থন লাভের জন্য তিনি কঠোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটের ক্ষেত্রে বর্তমান পার্লামেন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। কারণ এই পার্লামেন্টে গোতাবায়ার লোকজনই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এ জন্য শ্রীলঙ্কায় একটি পূর্ণাঙ্গ নতুন নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন।

প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে এখন পর্যন্ত যে চারজনের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে, বিরোধী দলের নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা, ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ারের নেতা অনুড়া কুমারা দেশনায়েক ও সাবেক মন্ত্রী ডালাস আলাহাপ্পেরুমা। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের প্রতি সমর্থন রয়েছে ক্ষমতাসীন দল শ্রীলঙ্কা পোডুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) এবং গোতাবায়ার ভাই বাসিল রাজাপক্ষের। ফলে ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের বড় একটি অংশের ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার। তবে একই কারণে তিনি সম্প্রতি ব্যাপক অজনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তার বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। রনিল বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ফের বিক্ষোভের আশঙ্কাও রয়েছে। এজন্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি নিরাপত্তা। তবে জ্বালানি সংকট সামাল দিতে পারলে রনিলের প্রতি জনসমর্থন তৈরি হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। তবে অতীতের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারে বিক্রমাসিংহে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ২০২০ সালে নিজ আসনেই তিনি নির্বাচনে হেরেছিলেন। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তিনি প্রেসিডেন্ট পদটিতে আসীন হয়েছেন। আগামী বুধবার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। সেদিন তিনি স্থায়ীভাবেও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পেতে পারেন। এই মুহূর্তে দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানো এবং সরকার পরিচলনা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে অনেক এমপি বিক্রমাসিংহকে সমর্থন করছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে জনগণ এখনো তাকে ভালোভাবে দেখছে না। প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা এবং সাবেক সাংবাদিক ডালেস আলাহাপেরুমা অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত হলেও ক্ষমতাসীন এসএলপিপির জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা ডালেস একজন সম্ভাবনাময় প্রার্থী। প্রেসিডেন্ট পদে লড়াইয়ে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোট ভাগ হয়ে বিক্রমাসিংহের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাও আছে।

 

সর্বশেষ খবর