মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ব্যয় সংকোচনে নির্দেশনা

মন্ত্রীদের গাড়ি নিয়ে বেশি ছোটাছুটি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যয় সংকোচনে নির্দেশনা

জ্বালানির ব্যবহার কমাতে মন্ত্রীদের গাড়ি নিয়ে বেশি ছোটাছুটি না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি প্রকল্পের ব্যয় কমানো, সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ, কেনাকাটায় সংকোচন নীতি প্রয়োগের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া দেশের প্রতিটি জমি পতিত না রেখে চাষাবাদ বা ফলমূল-সবজি উৎপাদনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে মন্ত্রিসভা সদস্যদের সঙ্গে তিনি বৈঠকে যুক্ত হন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলো তুলে ধরেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খরচ কমাতে প্রধানমন্ত্রী আজও পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্য আমাদের প্রকল্পগুলোর ক্যাটাগরি করা হয়েছে এ বি সি। ‘এ’ ক্যাটাগরির যেগুলো সেগুলো ইমিডিয়েটলি প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গুরুত্ব অনুযায়ী প্রকল্পগুলোকে ‘এ’, কোনোগুলো ‘বি’ ও কোনোগুলো ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ফেলবে। ‘এ’ ক্যাটাগরির প্রকল্পের পুরো টাকা খরচ করা যাবে। ‘বি’ ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলোয় ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত খরচ করা যাবে। আর ‘সি’ ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন স্থগিত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, কেনাকাটায় যথাসম্ভব যেগুলো না কিনলে হবে না, সে-জাতীয় কেনাকাটা চলবে। যেগুলো আপাতত না কিনলেও চলবে সেসব কেনাকাটা স্থগিত থাকবে। বিদেশে প্রশিক্ষণের বিষয়ে আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ট্রেজারি থেকে বিল হয় এমন কোনো বিদেশ ভ্রমণ এখন মন্ত্রণালয়গুলো করতে পারবে না। সরকারি টাকায় সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। তবে দরপত্রে থাকা দরদাতার ব্যয়ে প্রযুক্তি স্থানান্তরসংক্রান্ত যে বিদেশ সফর রয়েছে সেগুলো বন্ধ থাকবে না বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে খুবই জোর দিয়েছেন। বিশেষ করে কোথাও কোথাও যদি এক ফসলি জমি থাকে, সেখানে তিন ফসল করার বিষয়টি চিন্তা করতে হবে। বাড়ির উঠানে শাকসবজি করতে হবে। সবাইকে একটু সহযোগিতা করার জন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বিশেষ অনুরোধ করেছেন। কারণ এটা আমরা জানি না, কাল-পরশু চুক্তি হলো, কালই আবার ইউক্রেনের ওদেসা বন্দরে বোমাবর্ষণ হয়েছে। চুক্তি হয়েছে ইউক্রেন থেকে খাবারটা বেরিয়ে আসবে। বন্দর ছাড়া আসবে কীভাবে? এটা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নয়। সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে খাবার ও সার নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। আমাদের জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে হবে। যেভাবেই হোক আমরা যেন সাশ্রয়ী হই। অহেতুক এনার্জি ও টাকাপয়সা খরচ না করি। আমি এরই মধ্যে আমার অফিসরুমে জানালার পর্দা তুলে দিয়েছি, ছোট লাইটগুলো বন্ধ রাখছি।

সরকারি-বেসরকারি গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। একই ইস্যুতে বৈঠক শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চিন্তা করছি এটা নিয়ে। সব জায়গায় কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে। যেমন মন্ত্রীদেরও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন যে গাড়ি নিয়ে ছোটাছুটির দরকার নেই। এ কথা একটু আগেও বলেছেন। টানা করোনাভাইরাস মহামারি ও সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও ব্যয় সাশ্রয় করতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানির সাশ্রয় ও রিজার্ভ রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর