চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগ পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেয়েছে ৬ বছর ১৪ দিন পর। কিন্তু এই কমিটি ঘোষণার পরপরই উত্তাল হয়ে উঠেছে চবি ক্যাম্পাস। আবাসিক হলগুলোতে ৭০টির বেশি কক্ষে ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়াও সকাল ৮টার শাটল ট্রেনের চালক আবু তাহেরসহ লোকো মাস্টারকে অপহরণ করে শাটলের হোসপাইপ কেটে দেওয়া হয়। অপরদিকে এর প্রতিবাদে রেল শ্রমিক লীগের নেতারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে বের হতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাস। শহর থেকে আসতে পারেনি শাটল ট্রেন। ফলে শিক্ষার্থীরাও ক্লাস করতে না পেরে ফিরে যান। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন চলমান পরীক্ষাগুলো স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে। জানা গেছে, রবিবার দিনগত মধ্যরাতে ৪২৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি এবং ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগের (১৯ ব্যাচ) ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে রয়েছেন ১১৮ জন সহ-সভাপতি, ১২ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১১ জন সাংগঠনিক সম্পাদক। সভাপতি রেজাউল হক রুবেল শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল অনুসারী এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু আ.জ.ম নাসির উদ্দিনের অনুসারী।
পদবঞ্চিতদের অভিযোগ, শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা পদ বাণিজ্য করেছেন। তাই যোগ্য এবং ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন করে মাদক ব্যবসায়ী এবং অছাত্রদের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের দাবি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া মো. ইলিয়াস মাদক ব্যবসায়ী হয়েও পদ পেয়েছে। এ ছাড়াও কমিটিতে জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি পরিবারের সন্তানরা সুযোগ পেয়েছেন।এদিকে কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে চলাচলরত শাটন ট্রেনে হামলা ও লোকো মাস্টার ও গার্ডকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে নগরীর ঝাউতলা স্টেশন থেকে শাটল ট্রেনের লোকো মাস্টার (চালক) এল এম আবু তাহের ও দায়িত্বরত গার্ড এমাদুল হককে অপহরণের ঘটনা ঘটে।
রেল শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মামুন বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রাম পুরনো রেলস্টেশন থেকে ১৩১ নম্বর শাটল ট্রেন ছেড়ে যায়। ট্রেনটি ঝাউতলা এলাকায় পৌঁছালে কিছু যুবক এসে ট্রেনের গার্ড ও লোকো মাস্টারকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের কোনো হদিস নেই। এরপর থেকে আর কোনো ট্রেন চলাচল করেনি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সিআরবিসহ বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। বিনা কারণে রেল কর্মচারীদের অপহরণ, নির্যাতন, মিথ্যা মামলায় হয়রানি বন্ধ না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান শ্রমিক নেতারা।