যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদ এবং ঘৃণামূলক সহিংসতা প্রতিরোধকল্পে ১৫ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি শীর্ষ সম্মেলন করার ঘোষণা দিলেন। ১৯ আগস্ট শুক্রবার হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বাইডেনের এই সম্মেলনকে ‘আমাদের গণতন্ত্র এবং জননিরাপত্তার ওপর ঘৃণাতাড়িত সহিংসতার মারাত্মক প্রভাবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো’ বলে অভিহিত করেছেন। ‘ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড সামিট’ নামে এই সম্মেলনে মূল বক্তা প্রেসিডেন্ট বাইডেন। বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের অঙ্গীকারের পরিপূরক হিসেবে আমেরিকাকে আরও অধিক ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরত্বারোপ করবেন বাইডেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জিন-পিয়ারে এক বিবৃতিতে জানান, ১৪ মে নিউইয়র্কের বাফেলোতে একটি সুপার মার্কেটে বর্ণবিদ্বেষ প্রসূত নির্বিচার গুলিবর্ষণে ১০ জন কৃষ্ণাঙ্গের প্রাণ গেছে। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও তিনজন এখনো চিকিৎসাধীন। সেই বর্বরতার ভিকটিম পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় বাইডেন বলেছিলেন যে, আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধে আমাদের সবাইকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। হোয়াইট হাউস মনে করে, বাইডেনের এই সম্মেলন আমেরিকার সব বর্ণ, ধর্ম, রাজনৈতিক মতবাদের সবাইকে আমেরিকার চেতনা-মূল্যবোধের ক্ষেত্রে ঐক্যের পথ সুগম করবে। সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী-নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তা, সহিংসতার জন্যে চিহ্নিত ব্যক্তিবর্গের মধ্য থেকে এখন যারা সংশোধিত হয়ে ঘৃণামূলক অপরাধ দমনে প্রশাসনের সহযোগী হয়েছে তারাসহ ফেডারেল, স্টেট এবং স্থানীয় প্রশাসনের নেতৃস্থানীয়রা অংশ নেবেন এই সম্মেলনে। উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প আমলে শুরু হওয়া ধর্ম-বর্ণ-জাতিগত বিদ্বেষমূলক হামলার ঘটনা বাইডেন আমলেও কমেনি। অধিকন্তু মুসলমান এবং এশিয়ানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বেলা দেড়টায় নিউইয়র্ক সিটির রিচমন্ড হিলে তুলসী মন্দিরের সামনে নির্মিত মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। একই মূর্তি ভাঙার প্রথম চেষ্টা চালানো হয় এ মাসের ৩ তারিখ অর্থাৎ সংঘবদ্ধ একটি চক্র অহিংস আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধীকে সহ্য করতে না পেরেই এই আক্রমণ করছে এবং এর নেপথ্যে জাতিগত বিদ্বেষ প্রবল বলে অনেকে মনে করছেন। মন্দিরের সামনে কয়েক বছর আগে নির্মিত কংক্রিটের এই মূর্তি দিনদুপুরে ভেঙে ফেলার প্রথম প্রয়াসে ‘স্প্যানিশ’ ভাষা ব্যবহার করা হলেও ১৬ আগস্টে ছয় দুর্বৃত্ত গান্ধীকে উদ্দেশ করে হিন্দি ভাষায় গালমন্দ করেছে বলে মন্দিরের সার্ভিলেন্স ভিডিওর উদ্ধৃতি দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ ধরনের হিংস্র আচরণে শুধু হিন্দুরাই ভীতসন্ত্রস্ত নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও আতঙ্কগ্রস্ত বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে।