বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
বাম দলগুলোর প্রতিক্রিয়া

জ্বালানির মূল্য ৫ টাকা কমানো নিষ্ঠুর তামাশা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৩৪, ৪৪ ও ৪৬ টাকা বাড়িয়ে এখন ৫ টাকা কমানো হাস্যকর ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরকারের নিষ্ঠুর তামাশা বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে বিভিন্ন বাম রাজনৈতিক দল ও জোট। গতকাল গণমাধ্যমে পৃথক বিবৃতি পাঠিয়ে তারা তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৮০ টাকা থেকে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, অকটেন ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোল ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা করা হয়। গত ২৯ আগস্ট রাতে প্রজ্ঞাপন দিয়ে সব ধরনের জ্বালানির দাম লিটারে ৫ টাকা কমানো হয়। গতকাল বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিবৃতিতে জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-এর সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বাসদ (মার্ক্সবাদী)-এর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গনতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্ক্সবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হামিদুল হক বলেন, জ্বালানি তেলের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির পর এবার দাম কমানোর তামাশা করেছে সরকার। ৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পরিবহন ভাড়া ও দ্রব্যমূল্য। এখন জ্বালানি তেলের দাম লিটার প্রতি ৫ টাকা কমানোর ঘোষণা জনগণের সঙ্গে তামাশা এবং ব্যবসায়ীদের সুবিধাবৃদ্ধির নতুন পাঁয়তারা। এই মূল্য কমানোর কারণে পরিবহনের ভাড়াও কমবে না, অন্যান্য ক্ষেত্রেও বর্ধিত মূল্য কমবে না। শুধু সরকারের রাজস্ব কমবে মাত্র। বিবৃতিতে জ্বালানি তেল বিশেষত ডিজেল যা পরিবহন, কৃষি, বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতে ব্যবহৃত হয়, তার দাম কমিয়ে পূর্বের মত ৮০ টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানানো হয়। পৃথক বিবৃতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-সহ অন্যান্য বাম রাজনৈতিক দল।

সিপিবির বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার সময় যখন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে, তখন তা আমদানি করে বেশি দামে বিক্রি করেছে সরকার। আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতে জ্বালানির দাম লিটারে ৩৪-৪৬ টাকা বাড়িয়ে মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে দিয়েছে। অথচ, জ্বালানির সঙ্গে দেশের অর্থনীতি-দ্রব্যমূল্য-খাদ্য নিরাপত্তার নিবিড় সম্পর্ক, যা সরকার একেবারেই বিবেচনায় নেয়নি।

বাসদের বিবৃতিতে বলা হয়, বিপিসির আর্থিক হিসাবের অসংগতি (যা সংসদীয় কমিটি বলেছে) দূর করলে জ্বালানি তেলের দাম কমানো সম্ভব, এটা এখন প্রমাণিত। জনমনের অসন্তোষকে প্রশমিত করার নামে ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৫ টাকা কমানোর ঘোষণা জনগণের সঙ্গে তামাশা এবং ব্যবসায়ীদের সুবিধা বৃদ্ধির নতুন পাঁয়তারা। এতে পরিবহনের ভাড়া কমবে না বরং পরিবহন মালিকদের লাভ বাড়বে এবং সরকারের রাজস্ব কমবে। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) বিবৃতিতে বলা হয়, জ্বালানি তেলের মূল্য ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ বৃদ্ধির পর মাত্র ৫ টাকা সমন্বয়ের ঘোষণা জনগণের সঙ্গে নিষ্ঠুর তামাশা। জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির ফলে বাসভাড়াসহ সমস্ত কিছুর দাম বেড়েছে। ৫ টাকা কমার ফলে বাসভাড়া, দ্রব্যমূল্যসহ সব ধরনের বর্ধিত মূল্য কতখানি কমবে সে সম্পর্কে সরকারের কোনো ঘোষণা নেই।

 

সর্বশেষ খবর