ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত নারীর লাশটি খুলনার মহেশ্বরপাশা থেকে নিখোঁজ হওয়া গৃহবধূ রহিমা বেগমের (৫৫) বলে দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। উদ্ধার হওয়া ওই নারীর কাপড় দেখে প্রাথমিকভাবে নিজের মায়ের লাশ বলে জানিয়েছে রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান।
তবে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, উদ্ধার হওয়া নারীর লাশ অর্ধগলিত ছিল। তার পরনের কাপড় দেখে খুলনায় নিখোঁজ রহিমা বেগমের মেয়েরা এটি তাদের মায়ের বলে দাবি করছেন। কিন্তু ডিএনএ টেস্ট ছাড়া সঠিকভাবে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয়।
জানা যায়, ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনা মহেশ্বরপাশার নিজ বাড়ির দোতলা থেকে নিচে পানি আনতে নিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় মামলার পর পুলিশ ও র্যাব ছয়জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হয়।জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিখোঁজ গৃহবধূর মেয়ে মরিয়ম ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে লেখেন- ‘আমার মায়ের লাশ পেয়েছি আমি এই মাত্র।’ রাত ১২টা ৪ মিনিটে আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন- ‘আর কারও কাছে আমি যাবও না। কাউকে বলব না আমার মা কোথায়! কাউকে বলব না আমাকে সহযোগিতা করুন। কাউকে বলব না আমার মাকে একটু খুঁজে দেবেন। কাউকে আর বিরক্ত করব না। আমি আমার মাকে পেয়ে গেছি।’ তার এই স্টাটাসের পর পিবিআই, স্থানীয় থানা পুলিশ, সংবাদকর্মীরা সক্রিয় হন।
পুলিশ জানায়, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার বওলা এলাকায় একটি কবরস্থানের ঝোপজঙ্গল থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার হয়। শুক্রবার সকালে থানায় উপস্থিত হয়ে উদ্ধার হওয়া ওই লাশের পোশাক ও আলামত সম্পর্কে জানতে চান মরিয়ম। পোশাক ও উদ্ধার হওয়া আলামতের কথা শুনে নিজের মায়ের লাশ বলে দাবি করেন মরিয়ম। কিন্তু লাশটি অর্ধগলিত থাকায় তা আগেই দাফন করা হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ টেস্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, গতকাল বেলা ১১টার দিকে মায়ের লাশের খোঁজে চার বোন মরিয়ম মান্নান, কানিজ ফাতেমা, মাহফুজা আক্তার ও আদুরী আক্তার ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় এসে এমনটি জানান। গত ২৭ আগস্ট রাতে খুলনা শহরের মহেশ্বরপাশা গ্রাম থেকে নিখোঁজ হন তাদের মা রহিমা বেগম।
তবে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভ্ঞূা জানান, ‘লাশের সঙ্গে পরিধেয় পায়জামাটি দেখে নিহতের মেয়েরা বলেছেন তার মায়ের পায়জামার সঙ্গে মিল আছে। তবে নিশ্চিত না। নিশ্চিত হতে আমরা ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা পাঠিয়েছি। এর আগে কোনো কিছু নিশ্চিত হয়ে বলা যাচ্ছে না।’