গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ বন্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। সাত মাস বয়সী ইসির অধীনে এটাই ছিল কোনো সংসদীয় আসনের প্রথম নির্বাচন। আর ভোট গ্রহণের মাঝপথে পুরো আসনে ভোট বন্ধের নজিরবিহীন ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনের পাশাপাশি নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এ নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তের জন্য ইসির অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে গতকাল তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন। সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ভোটের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।
বিএনপিবিহীন এ ভোটে অংশগ্রহণকারী জাতীয় পার্টি ইসির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ দিলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, গোলযোগহীন এ নির্বাচনে ভোট বন্ধ করার কারণ তাদের কাছে স্পষ্ট নয়। ইসির সমালোচনায় মুখর সরকারি দলটি। এ ছাড়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোট সম্পন্ন হওয়া কেন্দ্রগুলোর ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ভোট গ্রহণ বন্ধ ঘোষণার পর বুধবারের মতো গতকালও সাঘাটা ও ফুলছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। ভোট গ্রহণ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনার মধ্যে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ভোট কেন্দ্রে অনিয়মের বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা ও মো. আলমগীর। তবে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান গতকালও নির্বাচন কমিশনে আসেননি।সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বলেন, ‘আমরা হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। এ সিদ্ধান্ত সিইসি গ্রহণ করেননি, কমিশন গ্রহণ করেছে। সিইসি কোনো সিদ্ধান্ত এককভাবে গ্রহণ করেন না; করতেও পারেন না। ঢাকা থেকে সিসিটিভিতে ভোট কেন্দ্রের পরিস্থিতি দেখার পর ভোটকক্ষে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনতে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’ তার পরও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ‘কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি’ বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান সিইসি। ওই পরিস্থিতিতে ‘সর্বসম্মত’ সিদ্ধান্তে ভোট বন্ধ করার কথা জানিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কমিশন বসে আলাপ-আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়। নিবিড়ভাবে প্রত্যক্ষ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ভোট বন্ধের কারণ স্পষ্ট নয় : গাইবান্ধা উপনির্বাচনে ঠিক কী কারণে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সেখানে (গাইবান্ধায়) সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছিল। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি। প্রিসাইডিং অফিসারদের ভাষ্যমতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে। আমরা আশা করি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে সিইসি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’ গতকাল দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঢাকা নগর পরিবহনের ২২ ও ২৬ নম্বর রুটে নগর পরিবহনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ঠিকমতো ভাগবাটোয়ারা না হওয়ায় নির্বাচন বন্ধ : আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশনের ভাগবাটোয়ারা ঠিকমতো না হওয়ায় গাইবান্ধার উপনির্বাচন বন্ধ রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে আবারও প্রমাণিত হলো, এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’ গতকাল দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শুরুর প্রাক্কালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করেও বর্তমান কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারায় নিজেরাই নির্বাচন বন্ধ করেছেন। সেই সঙ্গে এটাও প্রমাণ করে নির্বাচন কমিশন একটি ব্যর্থ কমিশন।’
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গাইবান্ধার উপনির্বাচনে মাঠে কর্মরত নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা লিখিত দিয়েছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, কোনো গন্ডগোল হয়নি। আর ৫০০ কিলোমিটার দূরে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নির্বাচন কমিশন পুরো উপনির্বাচন বাতিল করেছে। যে কারণে জনগণই বলছে কমিশনের এ সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ।’ গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এও প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচন সব সময় নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হয়, তাদের সিদ্ধান্তই সবার ওপরে, সরকারের সেখানে ভূমিকা নেই। ফলে বিএনপিসহ কেউ কেউ যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার প্রভৃতি নানা ধরনের সরকারের ফরমুলা দেয় তারও কোনো যৌক্তিকতা নেই।’ ড. হাছান মাহমুদ এ সময় প্রিসাইডিং অফিসারদের লিখিত রিপোর্টের কপি উপস্থাপন করে বলেন, ‘যেখানে নির্বাচন কমিশন এ কথাগুলো বলছে, সেখানে আমার কাছে ৯৮টি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারের লিখিত রিপোর্ট আছে যে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে, কোনো ধরনের কোনো গন্ডগোল হয়নি এবং রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশে ভোট বন্ধ করেছেন।’
মাঠ প্রশাসন ও ইসির বিশৃঙ্খলা : জানিপপ চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গাইবান্ধা উপনির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমাদের পুরো নির্বাচনব্যবস্থা যে ক্ষয়ে গেছে, খোলনলচে পাল্টানোর যে সময় এসেছে তা প্রমাণ করে। যে-কোনো মূল্যে জেতার যে প্রবণতা তা দেখা গেল।’ নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসনের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত আসায় আগামীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন তিনি।
নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘এটা একটা বিশৃঙ্খলা। জেলা প্রশাসক প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন- শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল কেন বন্ধ করেছে তা নিয়ে বিস্ময়। এতে মাঠ প্রশাসনের দৃশ্য পরিস্ফুটিত হয়েছে। আবার রিটার্নিং অফিসার বন্ধ করেছেন একটি কেন্দ্র আর ৫০টি কেন্দ্র বন্ধ করেছে ইসি।’ নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানের সঙ্গে ডিসি-এসপিদের বৈঠকে যে হইচই হয়েছিল তার প্রভাবও ভোটে পড়েছে বলে মনে করেন তিনি। এই নির্বাচন বিশ্লেষক বলেন, ‘ইসির সঙ্গে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার একটি ফল গাইবান্ধার নির্বাচনে দেখা গেল।’ তাঁর মতে, ‘ছোট উপনির্বাচন এটা, এখানে বিএনপিও ভোটে ছিল না। ৩০০ আসনে কেমন হবে সহজে অনুমেয়।’
ভোট বন্ধ নিয়ে যা বললেন সিইসি : গাইবান্ধার উপনির্বাচনে কেমন অনিয়ম হয়েছিল, ইসি কীভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে, কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে ভোট বন্ধ করা হয়েছে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন সিইসি হাবিবুল আউয়াল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়তো জনমনে কিছু বিভ্রান্তি থাকতে পারে। আমরা টকশোয় শুনেছি কেউ আনন্দিত হয়েছেন, কেউ ব্যথিত হয়েছেন, কেউ প্রতিবাদ করেছেন, কেউ সমবেদনা জানিয়েছেন। আমাদের মনে হয়েছে এতে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। সেই বিভ্রান্তি অপলোপনের জন্য কিছু ব্যাখ্যা আমাদের দেওয়া দরকার।’ তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সমার্থক নয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও একজন কমিশনার। একাধিক সদস্য নিয়ে এ কমিশন গঠিত হয়, একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হন এবং তিনি এ সংস্থার চেয়ারম্যান হন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কোনো সিদ্ধান্ত এককভাবে গ্রহণ করেন না বা করতে পারেন না। এজন্যই আপনাদের মাধ্যমে আমরা বলতে চাই যে আমরা কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিইনি। সবাইকে বুঝতে হবে, এটা কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা নিগূঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে তারপর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
লিখিত বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘বুধবার উপনির্বাচনটি যাতে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য ইসির পক্ষ থেকে করণীয় সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছিল। ২৮ সেপ্টেম্বর একজন নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভা করেন। সেখানে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্থানীয় প্রধান, সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। পরে সিইসি হিসেবে নিজে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি যাতে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হয়।’ ইভিএম ও সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের প্রসঙ্গ টেনে সিইসি জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর যতগুলো নির্বাচন করেছে এ কমিশন তার সব ইভিএম ব্যবহার করে অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রের প্রতিটি ভোটকক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।
অনিয়মের ধরন তুলে ধরে কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, ভোটারদের কন্ট্রোল ইউনিটে আঙুলের ছাপ দেওয়ার পরপরই এজেন্টরা গোপন ভোটকক্ষে প্রবেশ করে ভোটারদের ভোটদানের সুযোগ না দিয়ে নিজেই ভোট দিয়ে দিচ্ছেন, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ কেউ একই কাজ করছেন। তখন কমিশন থেকে ফোন দিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারদের ভোটকক্ষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ভোটকক্ষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ তাদের গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, ‘তখন ওই তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করার নির্দেশনা কমিশন থেকে দেওয়া হয়। পরে একে একে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ৫০টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখা হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের অবস্থা একই রকম দেখা যায়। ইতোমধ্যে রিটার্নিং অফিসার একটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেন। আমি এবং নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলি। কিন্তু পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। অন্য কেন্দ্রগুলোর সিসিটিভি দেখার সময় পেলে দেখা যেত সেগুলোয়ও একই অবস্থা। তাই কমিশন মনে করে এ ধরনের একটি আইনবহির্ভূত ভোট কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’ বেলা আড়াইটায় কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয় বলে উল্লেখ করেন সিইসি।
তদন্ত কমিটি গঠন : সিইসি জানান, উপনির্বাচনের অনিয়মগুলো তদন্ত করে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে একটি কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইসির একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে তিন সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ভোট বন্ধের প্রতিবাদে ফুলছড়ি ও সাঘাটায় বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ : জাতীয় সংসদের গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে নির্বাচন কমিশন ভোট বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদ এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গাইবান্ধা-ফুলছড়ি সড়কের ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পরে সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদের গেট সংলগ্ন সড়কে আধাঘণ্টা অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীর। এ সময় তারা সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান। ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ফুলছড়ি উপজেলা যুবলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান, ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রুহুল আমিন, খোরশেদ আলী, সোহেল পারভেজ শালু রাশেদুজ্জামান রোকন প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা ভোট বন্ধ করার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের পদত্যাগ দাবি করে বলেন, যেসব কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়েছে সেসব কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করে স্থগিত করা কেন্দ্রের ভোট গ্রহণের তারিখ অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে। এই আসনে এবারের মতো সুষ্ঠু নির্বাচন কখনো হয়নি দাবি করে বক্তারা বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভোট বন্ধের অযৌক্তিক সিদ্ধান্তে ভোটাররা হতভম্ব হয়ে গেছে।
এদিকে একই দাবিতে সাঘাটা উপজেলা পরিষদের সামনে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নাছিরুল আলম স্বপনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।