সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

বিচ্ছিন্নতাবাদী-জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিচ্ছিন্নতাবাদী-জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছি

পার্বত্য অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টসহ (ইউপিডিএফ) আরও কয়েকটি বাহিনী সীমান্ত এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এদের বিরুদ্ধে আমাদের সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনী কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাদের সঙ্গে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি যখনই টের পাচ্ছি, যে-কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী কিংবা কোনো জঙ্গি সংগঠন বাংলাদেশের যে-কোনো জায়গায় অবস্থান করছে, দ্রুত তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর কাজী আলাউদ্দিন রোডে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরে অগ্নিনির্বাপণে ব্যবহৃত বিশ্বের সর্বাধিক উচ্চতার (৬৮ মিটার) টার্ন টেবল লেডার (টিটিএল) গাড়ির উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে কেএনএফ, সন্তু লারমার একটা বাহিনীসহ আরও বাহিনী রয়েছে। এরা সব সময়ই আমাদের সীমান্ত এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রয়াস চালাচ্ছে। আমাদের সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে পুলিশ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলাতেই রয়েছে। পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও সেখানে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আমরা আমাদের এলাকায় থাকতে দিচ্ছি না, তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেএনএফের সঙ্গে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার বিষয়গুলো আমরা দেখছি। ধারণা করছি, সম্প্রতি যে জঙ্গিরা প্রশিক্ষণের জন্য ওখানে গিয়েছিল তারা কেএনএফের ক্যাম্পের পাশাপাশি অবস্থান করছিল। আমরা এগুলো দেখছি। জঙ্গিদের কয়েকজনকে গ্রেফতার ও কয়েকজনকে শনাক্ত করেছি। তাদের কাছ থেকে বিষয়গুলো জেনে আপনাদের জানাতে পারব।

অগ্নিনির্বাপণে সক্ষমতা বাড়ল ২৪ তলা পর্যন্ত : অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্বের সর্বাধিক উচ্চতার দুটি টিটিএল গাড়ি উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পর্যায়ক্রমে বহরে যুক্ত হবে আরও তিনটি টিটিএল গাড়ি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ফায়ার সার্ভিস এখন আর ঠুনকো দমকল বাহিনী নয়। যে-কোনো দুর্যোগেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তারা সর্বদা প্রস্তুত। আগে ১০-১২ তলা পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপণের যন্ত্র ছিল। এখন বিশ্বের সর্বাধিক উচ্চতার টিটিএল গাড়ি ২৪ তলা পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপণে সক্ষম হবে। দেশের প্রয়োজনে ফায়ার ফাইটাররা নিজের প্রাণ দিতেও দ্বিধাবোধ করে না। যার প্রমাণ জঙ্গি প্রতিরোধ অভিযান, এফআর টাওয়ার ও চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বি এম ডিপোয় অগ্নিকান্ডের সময় আমরা দেখেছি। সীতাকুন্ডের ডিপোয় নিহত ১৩ জন ফায়ার ফাইটারকে ‘অগ্নিবীর’ ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বলেন, সব দুর্যোগে প্রথম সাড়াদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। দেশে ৪৯০টি ফায়ার স্টেশন রয়েছে, আরও ৫৩টি স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষের দিকে। ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়াতে ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বঙ্গবন্ধু ফায়ার একাডেমি নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে দেশি-বিদেশিরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারবেন। ফায়ার সার্ভিসে নতুন সংযোজন টিটিএলের মাধ্যমে জনগণ জানমালের নিরাপত্তা পাবে।

ফায়ার সার্ভিসের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজের জন্য বিশ্বের সর্বাধিক উচ্চতার টিটিএল সংযোজন ফায়ার সার্ভিসে নতুন মাত্রা যোগ করবে। অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে টিটিএল অপরিহার্য ভূমিকা পালন করবে। প্রতিটি থানায় একটি করে ফায়ার স্টেশন করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। দেশে ১৪ হাজার ৪৪৩ জনবল নিয়ে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।

সর্বশেষ খবর