বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার থেকে ভালো

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার থেকে ভালো

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, চীন বাংলাদেশকে ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখে। চীনা বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রায় শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। আগামীতে এ বাণিজ্য সহযোগিতা আরও বাড়বে। রাষ্ট্রদূত বলেন, শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা অনেক অনেক ভালো। শ্রীলঙ্কায় পশ্চিমা ঋণই বেশি। ওই দেশে চীনা ঋণ মাত্র ১০ শতাংশ। রাষ্ট্রদূত লি গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন। অনুষ্ঠানে  আরও বক্তব্য দেন ডিক্যাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দিন। চীন স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় উল্লেখ করে লি জিমিং বলেন, অনেক চীনা কোম্পানি এ দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। তাই আমরা স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা চাই এখানকার অভ্যন্তরীণ ইস্যু শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে সমাধান হোক।

বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত বৈদেশিক মুদ্রা বিশেষ করে ডলার সাশ্রয়ের জন্য চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে রেনমিনবি (চীনের মুদ্রা) ব্যবহারের পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে চীনে রপ্তানি বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ ও চীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের বেশি। এর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রায় ৫০ কোটি ডলারের মতো। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, চীনে প্রতি বছর ইমপোর্ট-এক্সপো (বাণিজ্য মেলা) হয়, যেখানে অনেক দেশ চীনের বাজারের জন্য তাদের পণ্য প্রদর্শন করে। বাংলাদেশকে আমরা বিনা পয়সায় সেখানে বুথ দিতে চাই। কিন্তু এখানকার ব্যবসায়ীরা আগ্রহী হন না। এ প্রসঙ্গে চীনের রাষ্ট্রদূত জানান, সম্প্রতি তিনি কুনমিংয়ে একটি প্রদর্শনীর ভিডিও পেয়েছেন। যেখানে দেখা গেছে, বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের তাকে কোনো পণ্য নেই। গোটা প্যাভিলিয়নই খালি। রাষ্ট্রদূত বলেন, তাকে যাতে পণ্য প্রদর্শন করা হয় সেজন্য ভিডিওটি তিনি বাংলাদেশ-চীন চেম্বারকে দিয়েছেন। বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটে চীন বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াবে কি না- এমন এক প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, চীন নিজেই জ্বালানি আমদানি করে থাকে এবং আমাদের রপ্তানি করার পরিস্থিতি নেই। চীন কোনো ধরনের এলএনজি রপ্তানি করে না। এর পরও যদি বাংলাদেশে অত্যন্ত প্রয়োজন হয় চীন অলস বসে থাকবে না; কিছু একটা করবে। এমনকি বাংলাদেশের চলমান বিদ্যুৎ সংকটে জরুরি সহায়তা দিতে চীন প্রস্তুত রয়েছে। আমরা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটি অনুরোধ পেয়েছি এবং ইতোমধ্যে আমি সেটি বেইজিংয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের নানা সহায়তা করছে চীন। তবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফিরতে হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন নীরবে কাজ করছে। আমরা অবশ্যই নিরাপদ, স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চাই। সীমান্তের ঘটনায় মিয়ানমারে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি মিয়ানমার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মিয়ানমার ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। তারা এখন সীমান্তের সংঘাত নিয়ে টেনশনে আছে। তারা বলেছে, সেটা নিরসন হলেই প্রত্যাবাসন শুরু সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর