শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

৩৭০০ কোটি টাকা লোপাট তদন্তে অগ্রগতি নেই

দুদকের প্রতি হাই কোর্টের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ ডেপুটি গভর্নরের জড়িত থাকা ইস্যুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট যাচাই-বাছাইয়ে দুদকের কমিটিকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন হাই কোর্ট। আদালত বলেন, ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা লুটপাটে অভিযোগসহ অর্থ পাচারের তদন্তে দুদকের কোনো অগ্রগতি নেই। দুদক যে ঘুমিয়ে নেই, এটা প্রমাণ করতে হবে। গণমাধ্যমে প্রচারিত দুর্নীতির খবরগুলোকে দুদককে ইতিবাচকভাবে নেওয়ার পরামর্শ দেন আদালত। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে এ ঘটনায় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতে বাংলাদেশ ব্যাংক, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা এবং অডিট ফার্মসমূহের সংশ্লিষ্টতাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাহলে অর্থ আত্মসাৎ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীর নামে পৃথকভাবে সম্পদ অর্জন-সংক্রান্ত অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তবে সাবেক তথ্যসচিব মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ বা মামলা অনুসন্ধানের তথ্য পাওয়া যায়নি। ‘৩৭০০ কোটি টাকা লুটপাটে দায়ী পাঁচ ডেপুটি গভর্নর’ শিরোনামে প্রতিবেদন একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি) ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে ‘অবৈধভাবে’ জামানতবিহীন ঋণ নিয়ে মোট ৩ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইএলএফএসএল থেকে শুধু ভারতে কারাবন্দি প্রশান্ত কুমার হালদার এবং তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামেই নেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। বিআইএফসি থেকে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও তার প্রতিষ্ঠান নিয়ে গেছে ৬০০ কোটি টাকা। বছরের পর বছর ধরে এই লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও নিশ্চুপ ছিলেন প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল এই কর্মকর্তারা। পরে এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পাঁচ ডেপুটি গভর্নরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দুদক কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চান হাই কোর্ট। এর পরই দুদক এই প্রতিবেদন পাঠাল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর