মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধে অধিকাংশ মার্কিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

মুক্তিযুদ্ধে অধিকাংশ মার্কিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল

কেনেডি জুনিয়র

প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ এডওয়ার্ড (টেড) এম কেনেডি জুনিয়র বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মার্কিন জনগণের অবস্থান তুলে ধরে বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘কমেমোরেটিং দ্য ফিফথিয়েথ অ্যানিভার্সারি অব ইউএস রিলেশন্স’ শীর্ষক এক বিশেষ বক্তৃতা প্রদানকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস এবং কালচারাল অ্যাফেয়ার্স অ্যাটাচি শার্লিনা মরগান-হুসেন বক্তব্য রাখেন। এর আগে এডওয়ার্ড (টেড) এম কেনেডি জুনিয়র বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে তাঁর পিতার রোপণ করা ঐতিহাসিক বট গাছটি সপরিবারে পরিদর্শন করেন। বক্তৃতায় এডওয়ার্ড এম কেনেডি জুনিয়র বলেন, বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গত ৫০ বছর ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগামী ৫০ বছরে আরও শক্তিশালী হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমার বাবা বাংলাদেশের মানুষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৭১ সালের গণহত্যা সম্পর্কে আমাদের অনেক গল্প শুনিয়েছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধে তিনি সাহসী অবস্থান নিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, সেসময় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। আমার বাবা ১৯৭১ সালে ভারতে শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বর্বরতার চিত্র তুলে ধরেন। মিয়ানমারের শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান। কেনেডি জুনিয়র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আমার বাবা ১৯৭২ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি বট গাছের চারা রোপণ করেছিলেন। বট গাছটি দুই দেশের মানুষের বন্ধুত্বের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এখানকার কনস্যুলেট জেনারেলদের অনেকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির বিরোধিতা করেছেন। মার্কিন সরকারের ভূমিকা কীভাবে ভুল এ ব্যাপারে তাদের মতামত তুলে ধরে তারা টেলিগ্রামও করেছেন। এটি আনুষ্ঠানিকভাবেই ব্যক্তিগতভাবে, নীরবে করেছিলেন। তাদের কেউ কেউ এ জন্য পেশাগত প্রতিবন্ধকতার শিকারও হয়েছিলেন। এমনকি সাধারণ জনগণও এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের উন্নতির প্রশংসাও করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান পিতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার জন্য এডওয়ার্ড (টেড) এম কেনেডি জুনিয়রকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডি বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তুলেছিলেন।

 

সর্বশেষ খবর