ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশনে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এ সময় যাত্রীদের যাকেই সন্দেহ হয় তাকেই জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের ব্যাগে তল্লাশি করা হচ্ছে। গতকাল কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশনে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে পুলিশকে তল্লাশি চালাতে দেখা যায়। এ ছাড়া ঢাকা সদরঘাট টার্মিনালে নৌপুলিশ লঞ্চে লঞ্চে অভিযান ও তল্লাশি চালিয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু রেলস্টেশন ও সদরঘাটই নয়, ঢাকার সব প্রবেশমুখ গাবতলী, যাত্রাবাড়ী ও উত্তরাতেও চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অবশ্য, গতকাল বিকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত চেকপোস্ট কার্যক্রম চলছে। কারণ হলো, সামনে ১ থেকে ১৫ তারিখ একটা বিশেষ অভিযান ঘোষণা করেছি। এই মাসে ১৪ ডিসেম্বর, ১৬ ডিসেম্বর, ২৫ ডিসেম্বর বড় দিনের মতো বড় পাঁচটি কর্মসূচি আছে। কোনো নাশকতা যেন না ঘটে সেজন্য আমরা ঢাকার প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসিয়েছি। কোনো যাত্রীর ঢাকা আসা আমরা বন্ধ করিনি। গতকাল দুপুরে নৌপুলিশের সদরঘাট থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, সদরঘাট টার্মিনাল পাশাপাশি বাবুবাজার ও পোস্তগোলা ব্রিজের নদীবন্দর সদরঘাট নৌপুলিশের অধীনে। এসব স্থানে আমাদের চলমান তল্লাশি ও ঝটিকা অভিযান রুটিন মাফিক হয়ে থাকে। সেটা চলমান আছে। এ ছাড়া অপরাধের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে যে কোনো লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনালে নোঙর করার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা অভিযান চালাই। সেই অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। এদিকে ঢাকা রেলওয়ে থানার বিমানবন্দর রেলস্টেশন ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই কামরুল হাসান জানান, আদালত থেকে জঙ্গি পালিয়ে যাওয়া ও বিজয় দিবসের নিরাপত্তার জন্য তল্লাশি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। গত দুই দিন ধরে এটি চলছে। এ ছাড়া মাদক ও চোরাচালান রোধে তল্লাশি অব্যাহত আছে।
এদিকে যাত্রাবাড়ীতে চেকপোস্টে চলাকালে বিএনপির চার নেতা-কর্মীকে আটকের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহিতুল ইয়ামিন জানান, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা নাশকতা মামলার আসামি।
আমাদের সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুলিশের চেকপোস্টে বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের তল্লাশি করে পুলিশ। কোনো ব্যক্তির আচরণ কিংবা গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, গোপন সংবাদেরভিত্তিতে আমরা জানতে পেরেছি একটি গ্রুপ মহাসড়কে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। সে জন্য আমরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনগুলো তল্লাশি করা হচ্ছে।ঢাকার সমাবেশের আগে বাস ধর্মঘট হচ্ছে না : বিএনপির সমাবেশের আগে বিভিন্ন বিভাগে ধর্মঘট ডেকেছিল পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। তাতে দুর্ভোগে পড়তে হয় ওই সব এলাকার মানুষকে। বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। গতকাল পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখনো ধর্মঘট ডাকার ভাবনা তাদের নেই।
দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চে কমেছে আগাম টিকিট বিক্রি : লঞ্চে গতকাল থেকে ১০ ডিসেম্বরের আগাম টিকিট বিক্রি কমেছে। তবে লঞ্চ মালিকরা বলেছেন, ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে লঞ্চ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেননি তারা।