বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোয়ার্টার ফাইনালে বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। ফাইনাল খেলা হবে নির্বাচনে। আন্দোলনে হেরেছে মানে নির্বাচনেও হারবে। বিএনপির সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা হয়ে গেছে। ১০ তারিখে রাজনীতির মাঠে বিএনপি হেরে গেছে। এরপর সেমিফাইনাল খেলা হবে। নির্বাচনে হবে ফাইনাল খেলা। সব খেলায়-ই বিএনপি হারবে।
গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে সম্মেলন শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন। উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকসহ অনেকে। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ। অন্যদিকে গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন- বিএনপির সাত এমপি সংসদ থেকে পদত্যাগ করলেও সরকারের পতন হবে না। বিএনপি এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরে ভূত হয়ে গেছে। পাকিস্তান ছাড়া বিশ্বের কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। ৩৫০ এমপি নিয়ে সংসদ গঠন হয়েছে। তাতে জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারাও আছে। তাই সাত এমপির পদত্যাগে সরকার পতন হবে না। চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম-সংলগ্ন জিমনেশিয়ামের সামনের মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। সম্মেলন শেষে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ফের সভাপতির দায়িত্ব পান মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক হন মফিজুর রহমান। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম।
সম্মেলনের উদ্বোধক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে অচল করার পাঁয়তারা করছে। আগামী দিনে এমন পরিস্থিতি আসতেও পারে। তাদের মোকাবিলা করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে বিএনপি, জামায়াত, স্বাধীনতাবিরোধীদের চিনতে হবে।’ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সরকারের পতন ঘটাতে এসে নিজেদের পতন ঘটিয়ে দিয়েছে। সরকারের পদত্যাগ চাইতে এসে নিজেরা পদত্যাগ করে বসলেন সংসদ থেকে। বিএনপি মনে করেছে সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে সরকারের ভিত নড়ে যাবে। সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে। এর বেশি কিছু হয়নি। তারা যেদিন পদত্যাগ করেছেন সেদিনই সংসদ সচিবালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে সংসদের আসন শূন্য ঘোষণা করেছে। সামনে উপনির্বাচন হবে, এখন তারা বুঝবে কী ভুলটি তারা করেছেন। মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘১০ তারিখ (১০ ডিসেম্বর) সমাবেশ নিয়ে যারা স্বপ্ন দেখেছে তারাই ভেঙে পড়েছে। বিএনপি একটা মিথ্যাচারের দল, ষড়যন্ত্রের দল। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই তারা জনগণকে মিথ্যা বুলি শুনিয়ে রাজনীতি করে আসছে। ক্যান্টনমেন্টে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে এ দল প্রতিষ্ঠা করেছে। যে দলের সৃষ্টিই অবৈধ, তারা জনগণের দল হতে পারে না।’চুয়াডাঙ্গায় কমিটি ঘোষণা ছাড়াই ফিরে গেলেন কেন্দ্রীয় নেতারা : প্রকাশ্যে কমিটি ঘোষণা ছাড়াই ফিরে গেলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শেষে কমিটি ঘোষণার কথা ছিল। সাবজেক্ট কমিটির বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক পদে মতপার্থক্য দেখা দেওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতারা কমিটি ঘোষণা না করেই ফিরে যান।