বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ আত্মহত্যা করেছেন বলে তদন্তকারী সংস্থা ডিবি এবং র্যাব যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সংস্থা দুটির ব্যাখ্যা নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন বা সন্দেহ করার সুযোগ নেই জানিয়ে আন্দোলন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
গতকাল সন্ধ্যায় বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তারা। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কয়েক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে তাদের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ডিবি ও র্যাবের তদন্তে যেসব বিষয়ে আমাদের মনে সন্দেহ বা প্রশ্ন জেগেছিল, তার সবকটির সন্তোষজনক উত্তর আমরা পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করার মতো আর কোনো এলিমেন্ট আমাদের হাতে নেই।
আন্দোলন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়ে এক শিক্ষার্থী বলেন, ডিবি ও র্যাব কার্যালয়ে গিয়ে আমরা যেসব তথ্য-প্রমাণাদি জেনেছি, আমরা ক্যাম্পাসে ফিরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তা আলোচনা করেছি। তাদের ব্যাখ্যায় আমাদের কোনো কনফিউশন নেই। তাই সর্বসম্মতিক্রমে আমরা আপাতত কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছি না। ভবিষ্যতে কোনো ক্লু থেকে ফারদিনের পরিবার এটা নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হলে, যৌক্তিক দাবিতে আমরা তাদের পাশে থাকব।শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা যে ইফোর্ট বা ডিজিটাল ইনফরমেশন দেখিয়েছেন, তাতে প্রশ্ন করার সুযোগ আমাদের কম। আমাদের মাথায় যা যা প্রশ্ন ছিল, সব প্রশ্ন করেছি। যে ফুটেজটা দেখিয়েছে, যে সময় ব্রিজ থেকে লাফ দেওয়া হয়, সে সময় থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। টাইম ও লোকেশন মিলিয়ে এটা ফারদিন বলে তারা শনাক্ত করেছেন।
গত ৪ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হওয়ার পর ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক হত্যার আলামত পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। ফারদিন মাদক কারবারিদের হাতে খুন হয়েছেন বলে শুরুর দিকে পুলিশও ধারণা দিয়েছিল। তবে গত বুধবার একে আত্মহত্যা বলে জানায় ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি ও ছায়া তদন্তকারী র্যাব। সংস্থা দুটি জানায়, নিখোঁজ হওয়ার দিন ভোরে ডেমরার সুলতানা কামাল সেতু থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ফারদিন।
শুরুতে তাদের বক্তব্যের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেননি তার সহপাঠীরা। বৃহস্পতিবার ডিবি কার্যালয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। সেখানে তদন্তে পাওয়া তথ্য ও ব্যাখ্যা শিক্ষার্থীদের জানানো হয়। সেই ব্যাখ্যায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে কোন কারণে আত্মহত্যা করেছেন, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তারা দিতে পারেননি বলে জানান বুয়েট শিক্ষার্থীরা।