বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ সামছুল হক বলেন, মেট্রোরেল শুধু দ্রুতগতির পরিবহন নয়, এটা পুরো পরিবহন ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলে। যেমন পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চ মালিকরা ভাড়া কমাতে বাধ্য হয়েছেন। লঞ্চযাত্রায় তারা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মেট্রোরেল হয়তো ঢাকার বাস মালিকদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।
গতকাল তিনি আরও বলেন, ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণের বিষয়ে ২০০৫ সালে যখন পরিকল্পনা নেওয়া হয়, তখন এর নানা বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হই। তখন থেকেই গণপরিবহনের একটি স্বপ্নের উপকরণ যুক্ত করার প্রত্যাশা বাড়তে থাকে। সত্যি কথা বলতে কি, ঢাকায় গণপরিবহন বলতে কিছুই নেই। গণপরিবহন হচ্ছে এমন একটা ব্যবস্থা যে, এর নির্দিষ্ট স্টেশন থাকবে। সেখানে সময়মতো যাত্রীবাহী যান আসবে, ছেড়ে যাবে। যাত্রী জানবেন যে স্টেশনে গেলে যানবাহন পাবেন, সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাবেন। সেভাবেই উন্নত বিশ্বে মানুষ বাসা থেকে বের হন। এত দিন ঢাকার গণপরিবহন বলতে বাসই ছিল মূল ভরসা। কিন্তু এর কোনো নির্ধারিত স্টেশন নেই, নেই সময় মেনে চলার সংস্কৃতি। এখন ঢাকাবাসী পাবেন মেট্রোরেল। মেট্রোরেল বিশ্বব্যাপী সময়ানুবর্তিতার একটি সংস্কৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ঢাকার মেট্রোরেলেও তা সম্ভব।
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ সামছুল হক আরও বলেন, আমাদের বাসব্যবস্থায় সেবা বলতে কিছুই নেই। ভাড়া নিয়ে আছে নৈরাজ্য। মানুষ যখন দেখবেন মেট্রোরেলে দ্রুত যানজট এড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যাচ্ছে, তখন বাসে উঠতে চাইবেন না। বাস মালিকরা হোঁচট খাবেন। তখন সেবা বাড়াতে বাধ্য হবেন, যৌক্তিক ভাড়া আদায় করতে সচেষ্ট হবেন। এর জন্য মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকেও সতর্ক থাকতে হবে। সেবার মান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ঘাটতি যেন না থাকে। সময় মেনে মেট্রোরেল চালাতে হবে। নয়তো মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। এ ছাড়া স্টেশনের কাছে ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে। যাতে সেখানে যানজট তৈরি না হয়।