বুধবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি এড়াতে হবে

-ড. জামালউদ্দিন আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি এড়াতে হবে

নতুন বছরে দেশের অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা দুটিই রয়েছে বলে মনে করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জামালউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো মুদ্রাস্ফীতি কমানো। কেননা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে। দ্বিতীয়টা হলো, বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরানো। অবশ্য এ খাতের অস্থিরতা কিছুটা কমে আসছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। অর্থনৈতিক কূটনীতি, বিশ্ব কূটনীতি, শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে  আমাদের একটা সামঞ্জস্যপূর্ণ কূটনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক কোনো ধরনের স্যাংশনের আওতায় পড়া যাবে না। আমাদের মতো দেশগুলোর জন্য এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। কোনো কারণে স্যাংশনের আওতায় পড়লে সেখান থেকে বের হওয়া খুবই কঠিন হয়ে যাবে। ফলে স্যাংশন এড়িয়ে চলাই হতে হবে সর্বোত্তম কূটনৈতিক কৌশল। তিনি বলেন, নির্বাচন কেন্দ্র করে কোনো প্রকার সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা হবে আমাদের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ। উভয় দলকে সহনশীল আচরণ করতে হবে। এটাও একটা চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই পরিচালক গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের গলদ রয়েছে। এটা ঠিক করতে হবে। যেমন ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অনিয়ম, দুর্নীতি কমিয়ে আনতে হবে। ব্যাংকিং খাত বিনষ্ট হলে অর্থনীতির সব খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইতোমধ্যে প্রভাব তো কিছুটা পড়তে শুরুও করেছে। ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ও সুশাসন ফেরাতে না পারলে শেয়ারবাজারেও এর প্রভাব পড়বে। কেননা ব্যাংকিং খাতের সমস্যা অর্থনীতির অনেক খাতের জন্যই সমস্যার রুট হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া সরকারের মধ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে বেফাঁস কথা বলা বন্ধ করতে হবে। দায়িত্বশীল পর্যায়ে যে কোনো একটা জায়গা থেকে কথা বলতে হবে। একেক জায়গা থেকে একেক রকম কথা বললে জাতি বিভ্রান্ত হয়। মানুষ অ্যাকুরেট তথ্য জানতে পারে না। ফলে এখানেও কথা বলার সময় দায়িত্বশীলদের মুখে লাগাম দেওয়াটাও একটা চ্যালেঞ্জ। ব্যাংকিং বা আর্থিক খাতের কোনো সমস্যা একেকজন অন্যের ঘাড়ে না চাপিয়ে এটাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে মানুষের আস্থা বাড়বে। অন্যথায় ব্যাংকিং খাতের সমস্যা আরও বাড়বে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন কেন্দ্র করে কোনো প্রকার সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা হবে আমাদের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ। এটা বাদ দিয়ে গঠনমূলক রাজনীতি করতে হবে। এ বছরটা যেহেতু নির্বাচনের, তাই উভয় দলকে সহনশীল আচরণ করতে হবে। আমেরিকায় যেমন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান- এখানেও তো তেমন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জোট। এ দুটি জোটের মধ্যে যদি দেশপ্রেম ও দেশের উন্নতির স্বার্থে সবাই নিজেদের সংযত রাখতে পারে তাহলে উন্নয়নের গতি স্বাভাবিক থাকবে। যার মাধ্যমে আমরা একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। এটাও কিন্তু একটা চ্যালেঞ্জ।

সর্বশেষ খবর