সবাইকে যত্ন নিয়ে মেট্রোরেল ব্যবহার করার জনসচেতনতা তৈরি করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর মতো মেট্রোরেলও দেশের জাতীয় সম্পদ। এ ছাড়া ঋণ প্রাপ্তি ও পণ্য রপ্তানিতে কৃষিপণ্যের মতো সুযোগ-সুবিধা দিতে পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় তিনি এসব নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা যেন এটা প্রচার করি ব্যবহারে সচেতন হতে। সার্বিক যত্ন নিয়ে যেন আমরা ব্যবহার করি, সে বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতে বলেছেন তিনি।পাটের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে পাটজাত পণ্য ও পাটের আঁশের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি এখানে অনেক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এটিকে কাজে লাগাতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এখন থেকে পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করতে হবে। এতদিন এটা কৃষিপণ্য ছিল না। অনেক দিন ধরেই পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছিল। আজকে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, এটাকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করা হবে।
শরীয়তপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জানিয়ে মাহবুব হোসেন জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ?‘শেখ হাসিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি অন্যান্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের মতোই। ফলে বর্তমানে দেশে ৫৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় (কয়েকটির অনুমোদন হলেও এখনো চালু হয়নি) রয়েছে। সরকারের নীতি হলো প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, বিশেষ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নয়, বরং ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ ও সমন্বয়ে সরকারকে ক্ষমতা দেওয়া অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করা হচ্ছে। এ জন্য ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২২’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এটি আগে অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়। তখন সংসদ অধিবেশন না থাকায় আমরা অধ্যাদেশ আকারে জারি করেছিলাম। এখন সংসদ চলমান আছে এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাও রয়েছে এটি সংসদে ওঠানোর। অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করার জন্য এটি আবার সাধারণ প্রক্রিয়ায় সংসদে নিতে হবে। সে জন্য মন্ত্রিসভায় ঠিক আগের অধ্যাদেশটাই সংসদে উপস্থাপনের জন্য নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
এর আগে ২৮ নভেম্বর ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এ ছাড়া কৃষিপণ্য বিপণন সহায়ক বাজারের তথ্য ব্যবস্থাপনাকে আরও শক্তিশালী করতে মন্ত্রিসভা ‘জাতীয় কৃষি বিপণন নীতি-২০২৩’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, এই নীতিমালা দ্বারা বাংলাদেশের কৃষির যে উৎপাদন হয় এবং দেশে যে প্রচলিত বাজার ব্যবস্থা আছে সেটাকে আধুনিকায়নের জন্য কিছু কৌশল বা নীতি গ্রহণ করা হবে। সেখানে কৃষিপণ্য বিপণনকে বাজারমুখী করা যায় এবং উৎপাদনকারীকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা দেওয়া যায়, এ ব্যাপারে কীভাবে সহযোগিতা করা যায় সে বিষয়গুলো আনা হয়েছে।