মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফখরুল-আব্বাস এক মাস পর কারামুক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফখরুল-আব্বাস এক মাস পর কারামুক্ত

কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। গতকাল বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে কারামুক্ত হন তাঁরা। কারামুক্তির পর দুই নেতা রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। সেখানে তাঁরা অপেক্ষমাণ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

দীর্ঘ ৩২ দিন পর কারামুক্ত দুই নেতার মুক্তির অপেক্ষায় দুপুর থেকেই নেতা-কর্মীরা কারাগারের প্রধান ফটকে অপেক্ষা করছিলেন। সন্ধ্যায় দুই শীর্ষ নেতা বের হয়ে এলে    বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী তাঁদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন। এর আগে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে উচ্চ আদালতের দেওয়া বিএনপির দুই নেতার জামিনের কাগজপত্র কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়।

তার আগে দুই নেতার জামিনের সংবাদ পেয়ে গতকাল বিকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার চত্বরে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা সমবেত হন। কারাগার কর্তৃপক্ষ কারা এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়।

গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ সামনে রেখে ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় ৮ ডিসেম্বর রাতে গ্রেফতার হওয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের জামিন গত রবিবার বহাল রাখেন সর্বোচ্চ আদালত।

গত মঙ্গলবার হাই কোর্ট রুলসহ দুজনের ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ পরদিন আবেদন করে, যা আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ রবিবার বিএনপির এ দুই নেতার ছয় মাসের জামিন আদেশ বহাল রাখেন। ফলে তাঁরা মুক্তি পান।

পিছু হটার পথ নেই-ফখরুল : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা ও আপনাদের আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা মাত্র দুজন মুক্তি পেয়েছি। আরও অনেকে এখনো কারাগারে। শুধু বন্দি নয়, তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একটা সেলের মধ্যে পাঁচ-সাতজনকে গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে। গতকাল রাতে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী মির্জা ফখরুলকে ফুলের মালা দিয়ে অভিনন্দন জানান। প্রিয় নেতার মুক্তিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন দলীয় কর্মীরা।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা গ্রেফতার করে ভোটের অধিকারের আন্দোলন বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল কিন্তু এতে আন্দোলন আরও বেগবান হয়েছে। সারা দেশ আন্দোলনে প্রকম্পিত হচ্ছে। সরকার যত বেশি অত্যাচার করবে তত বেশি মানুষ ফুঁসে উঠবে। পিছু হটার পথ নেই। আন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছব। তাই আন্দোলন আরও তীব্র করতে হবে। এর মাধ্যমে দেশকে মুক্ত করতে হবে। আসুন এই শপথ নিয়ে নতুন অঙ্গীকার করি। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সমাবেশের স্থান নির্ধারণ নিয়ে অস্থির অবস্থার মধ্যে গ্রেফতার করা হয়। আমার অপরাধ ছিল আমি সংঘর্ষ এড়িয়ে গেছি। সরকারকে বলব বিএনপি সন্ত্রাসী দল নয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় তারেক রহমান তাদের পরিবারের খোঁজ নেওয়ায় ধন্যবাদ জানান তিনি। আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ খালেদা জিয়ার মুক্তি ত্বরান্বিত করা হবে বলেও দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। এ সময় অন্যদের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, দলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদল সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর