সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
আনসার ও ভিডিপির জাতীয় সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে আর পেছনে তাকাবে না

গাজীপুর প্রতিনিধি

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে আর পেছনে তাকাবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই দেশ আর পেছনে ফিরে তাকাবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের যে পদক্ষেপ নিয়েছি, এতে এই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।

গতকাল গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমির ইয়াদ আলী প্যারেড গ্রাউন্ডে বাহিনীর ৪৩তম জাতীয় সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক এবং বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট মো. ফখরুল আলম তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন এবং একটি খোলা জিপে চড়ে প্যারেড পরিদর্শন করেন। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহকারী পরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, এবারের প্যারেড কমান্ডার ছিলেন আনসার সদর দফতরের পরিচালক ড. সালমা সিদ্দিকা। এ বাহিনীর ইতিহাসে এই প্রথম একজন নারী কর্মকর্তা প্যারেড কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য-সদস্যাদের অসীম সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজের পাশাপাশি বুদ্ধিমত্তা, একনিষ্ঠতা, সততা, দূরদর্শিতা, মমত্ববোধ প্রভৃতির দৃষ্টান্তপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর আট ক্যাটাগরিতে ১৮০ জনকে সাহসিকতা ও সেবা পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। আমরা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি। আমাদের দেশে মেট্রো রেল চালু হয়েছে। পাতাল রেলও চালু হবে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল করে দিচ্ছি। পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থায়নে আমরা করেছি। আর প্রতিটি স্থাপনার নিরাপত্তার সঙ্গে আনসার বাহিনী বিশেষভাবে জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামেও আপনারা কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব। স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশটা আমরা অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন করেছি এবং আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমরা আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াও যখন বিএনপি-জামায়াত জোট শুরু করেছিল, বাস, ট্রেন, লঞ্চ, গাড়িতে যখন তারা আগুন দিচ্ছিল, আনসার বাহিনীর সদস্যরা তখন নিজ নিজ এলাকায় দায়িত্ব পালন করে এ অগ্নিসন্ত্রাস থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে যথেষ্ট সহায়তা করেছে। তাছাড়া জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনেও ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। পাশাপাশি খেলাধূলা এবং শরীরচর্চাসহ ক্রীড়াঙ্গনেও আনসার বাহিনীর সদস্যরা বিরাট ভূমিকা রেখে যাচ্ছে এবং অনেক পুরস্কারও পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারি এবং পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বপ্যাপী অর্থনৈতিক যে মন্দা দেখা দিয়েছে তা থেকে আমাদের মুক্ত রাখতে হবে। এ জন্য জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমি আহ্বান করেছি এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। যত অনাবাদি জমি আছে সবগুলো আবাদ করতে হবে। সেক্ষেত্রে গ্রামের লোকদের শেখানো, তাদের দিয়ে কাজ করানো, ফসল উৎপাদন ও তা সংরক্ষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কিন্তু আনসার ও আমাদের গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা পালন করতে পারেন। আমি আশা করি আপনারা তা করবেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি, রুমানা আলী টুসী এমপি, গাজীপুর মেট্রোপলিটর পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোতাহার হোসেন মোল্লা প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর