রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইবিতে ছাত্রলীগের পাঁচজন বহিষ্কার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে প্রথমবর্ষের ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদাসহ পাঁচ নেতা-কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্তদের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। জবাবের প্রেক্ষিতে পরবর্তী সিন্ডিকেটে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অপরাধে সংশ্লিষ্টতা অনুযায়ী ছাত্রত্ব বাতিলও হতে পারে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী ছাত্রীকে পছন্দমতো হলে আবাসিকতা দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিকালে উপাচার্যের কার্যালয়ে আলোচনা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। বহিষ্কৃত ছাত্রীরা হলেন- পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের তাবাসসুম ইসলাম, একই বর্ষের আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মাওয়াবিয়া। অন্যদিকে অডিও কাণ্ডে ১৬ দিন পর গতকাল নিজ কার্যালয়ে ফিরেছেন উপাচার্য। জানা যায়, গতকাল সকাল ১০টার দিকে ক্যাম্পাসে আসেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলে থাকার ইচ্ছা পোষণ করায় তাকে ওই হলের ব্লকের ৫০১ নম্বর কক্ষে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নিরাপত্তার জন্য কুষ্টিয়া ও পাবনার পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ নির্যাতনে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচজনকে অস্থায়ীভাবে বহিষ্কারের আদেশ দেন। একই সঙ্গে নির্যাতনের শিকার ছাত্রীকে পছন্দমতো হলে আবাসিকতা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নির্যাতনের শিকার ছাত্রী বলেন, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। দেশের মানুষ আমাকে সাহস জুগিয়েছে এবং পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে ভালো লাগছে। আমি পড়াশোনা করে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। আমার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে তা যেন আর কারও সঙ্গে না ঘটে এটিই আমার চাওয়া। ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘আমাকে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে হলে সিট দেওয়ার বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমি হল প্রভোস্টের সহযোগিতায় ভুক্তভোগীর পছন্দ অনুযায়ী হলে সিট বরাদ্দ দিয়েছি। তাকে অভয় দিয়ে নির্বিঘ্নে হলে থেকে ক্লাস-পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বলেছি।’ প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নেতৃত্বে হালিমা আক্তার ঊর্মি, ইসরাত জাহান মীম, তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান প্রথমবর্ষের এক ছাত্রীকে রাতভর শারীরিক নির্যাতন করেন। পরের দিন ভয়ে হল থেকে পালিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান ওই শিক্ষার্থী। তার বাড়ি পাবনা জেলার আটঘরিয়ায়।

সর্বশেষ খবর