সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আজকে সমগ্র দেশের মানুষ প্রথম আলোর ঘটনার ব্যাপারে মুখ খুলেছে, প্রতিবাদ করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ক্ষমা চায়নি। বরং এটার বিরুদ্ধে তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ‘এই অপপ্রচারও একটি অপরাধ’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে দেশে প্রতিদিন পত্রিকা, টিভি, অনলাইনে রিপোর্ট হয়েছে এবং হচ্ছে। মামলা তো দূরে থাক, কাউকে এ নিয়ে প্রশ্নও করা হয়নি। তাই শামসুজ্জামানকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে লেখার কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এটিও একটি অপরাধ। এটার জন্য আবার কেউ মামলা করে কি না সেটিও দেখার বিষয়। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সারা দেশে এ নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিক, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম, সংবাদপত্র পরিষদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরাসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছে। হাছান মাহমুদ বলেন, মামলা হওয়ার পর শামসুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাত ৪টায় অনেক সংসদ সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়। দেশে কয়েক দফা মন্ত্রী ছিলেন এবং বড় রাজনীতিবিদ তাদেরও গ্রেফতার করা হয়। আমরা সবাই জেলে গেছি। বেশির ভাগকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। কই তখন তো কোনো প্রশ্ন আসেনি। সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, সুতরাং রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, এমপি যারা ছিলেন তাদেরসহ সবাইকে রাতে গ্রেফতার করা যাবে কিন্তু একজন সাংবাদিক যদি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে কটাক্ষ করেন, একজন শিশুকে এক্সপ্লয়েট করেন আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব খাটো করেন, তাকে গ্রেফতার করা যাবে না এমন আইন তো নেই। মামলা দায়ের হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। এখানে দেখতে হবে, তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়েছে কি না। নির্যাতনের কোনো অভিযোগ তো আসেনি। হাছান বলেন, আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সবসময় চেষ্টা করি এবং যখনই কোনো সাংবাদিক হয়রানির স্বীকার হন তখন সবার আগে হস্তক্ষেপ করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, সবার ওপরে আমরা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে স্থান দিই এবং সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে যেন এমন কোনো কাজ না করি যাতে করে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা পরিপন্থী, দেশবিরোধী কোনো কিছু হয়। বিএসপি সভাপতি ও প্রবীণ রাজনীতিক মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, ‘প্রথম আলো বিভিন্ন সময় নেগেটিভ সংবাদগুলো সবচেয়ে আগে প্রকাশ করে। আমার বক্তব্য হলো, প্রকাশ করতে পারে কিন্তু এর একটা যৌক্তিকতা থাকতে হবে। বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করা সংবাদপত্রের নীতিমালা নয়। নিশ্চয়ই আমরা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা চাই, অধিকার চাই। কিন্তু এর একটা সীমা আছে। সাংবাদিকতায় এ জিনিসটা বারবার ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।’ বিএসপির সাধারণ সম্পাদক এম জি কিবরিয়া চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতাকে যারা মানে না, তারা দেশকেও মানে না। কেউ বাংলাদেশে সাংবাদিকতা করবেন আর দেশকে মানবেন না, এটা হয় না। সাড়ে ৩ শ পত্রিকার প্রকাশক-সম্পাদকদের এ সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ মনে করে, সাংবাদিকতা নীতিমালা মেনেই সংবাদপত্র প্রকাশ করতে হবে, ছাপাতে হবে। যারা এ ধরনের লেখনী লিখছেন, এটা অনভিপ্রেত, অযাচিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

সর্বশেষ খবর