আবাসিক হলের ১০ তলা থেকে লাফ দিয়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাড়িয়া রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চলমান একাডেমিক পদ্ধতির পরিবর্তনসহ সাত দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল পূর্ব ঘোষিত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত প্রায় ৫ ঘণ্টা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর মাঝে দেড়টায় উপাচার্য বরাবর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল তাদের দাবি সংবলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় উপাচার্যের কাছে দাবিসমূহ বাস্তবায়নের সময়রেখা জানতে চাইলে সুনির্দিষ্ট কিছু না বলায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপাচার্যকে অবস্থানকারীদের সামনে এসে ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। পরে শেকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শিক্ষার্থীদের হলে ফিরে যেতে বলেন। এ নিয়ে বাগবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা জানান, আমরা প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে জানতে পেরেছি প্রশাসন মাড়িয়ার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অন্যান্য একাডেমিক কার্যক্রম সংক্রান্ত দাবিগুলো পর্যালোচনা করে কমিটি গঠন করবেন বলেছেন। তবে এ কমিটি কবে নাগাদ আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করতে পারবে- সে ব্যাপারে কিছু বলেননি। উপাচার্য প্রফেসর ড. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, ‘মাড়িয়ার মৃত্যু নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিল মিটিং এবং সে অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বিবেচনা করব, তবে এটি অনেক লম্বা প্রক্রিয়া হওয়ায় এখনই কোনো নির্দিষ্ট বা আনুমানিক তারিখ জানাতে পারছি না।’ শেকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদানকারী প্রতিনিধি দল যে সাত দফা দাবি জানিয়েছেন তা হলো- ১) মাড়িয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ; ২) মাড়িয়ার পরিবারকে এককালীন অর্থ প্রদান; ৩) ক্যারিঅন ব্যবস্থা চালুকরণ; ৪) এক ক্লাসটেস্ট ও এক ফাইনাল পরীক্ষার পাশাপাশি পরীক্ষা সপ্তাহ চালু; ৫) ব্যবহারিক ক্লাসের নোটই পরীক্ষায় জমা প্রদান; ৬) শারীরিক অসুস্থতার দরুন ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণে নিয়ম শিথিলসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী আচরণ সম্পর্কিত সুস্পষ্ট আচরণবিধি ও নীতিমালা করতে হবে।