শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

মৎস্যজীবী লীগ নেতার হাতে বিদেশি পিস্তল

ফরিদপুর প্রতিনিধি

মৎস্যজীবী লীগ নেতার হাতে বিদেশি পিস্তল

ফরিদপুরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের পিস্তল নিয়ে ছবি বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। এবার সত্যিকারের একটি বিদেশি পিস্তলসহ মৎস্যজীবী লীগ নেতার ছবি প্রকাশ্যে আসায় তোলপাড় শুরু হয়েছে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে। জেলা মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান পরশ শিকদারকে দেখা গেছে একটি বিদেশি পিস্তল হাতে নিয়ে শো অফ করতে। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। শুরু হয় নানা বিতর্ক ও সমালোচনা। সম্প্রতি বোয়ালমারী উপজেলায় একজন ছাত্রলীগ নেতাসহ একে একে তিনজনের এভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্রসহ ছবি প্রকাশের ঘটনায় অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এসব ঘটনায় উদ্বেগ ছড়াচ্ছে জনমনে। তবে একের পর এক এ অস্ত্রবাজির ছবি থামছে না। পরশ শিকদার জানিয়েছেন, তিনি দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির শিকার। বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা পিকুলের রাজনীতি না করায় তার এ ছবিটি ফেসবুকে ছেড়ে তাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ছবিটি ফটোশপের কারসাজি নয়, আসল উল্লেখ করে পরশ সিকদার বলেন, পাঁচ বছর আগে শাহজাহান মৃধা পিকুলের ভাগ্নে পৌর যুবলীগের নেতা মিনহাজুল আবেদিন চয়নের মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ছবিটি তোলা।

তিনি জানান, চয়নের একজন পরিচিত ব্যক্তির বাড়ির পেছনের খামারে আসা বড় পাখির উপদ্রবের কারণে একটি দামি এয়ারগান কিনতে যাওয়ার সময় চয়নই আমাকে তার গাড়িতে করে ওই বন্দুকের শো রুমে নিয়ে গিয়েছিল। সেই এয়ারগান ক্রেতার বাড়ি বেনাপোল বলে জানালেও তার নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি। পরশ সিকদার বলেন, বন্দুকের শো রুমে তিনি বসে ছিলেন। তখন ডিসপ্লে করে রাখা পিস্তলটি দেখিয়ে চয়ন আমাকে বলে, ‘মামা এটা একটু উঁচু করে ধর তো, একটা ছবি তুলি।’ এরপর সে মোবাইলে ছবিগুলো তোলে। আরও অনেক ছবি সে তুলেছিল। তবে এতদিন এসব ছবি কোথায় কার কাছে ছিল তাও জানা ছিল না। বুধবার রাতেই প্রথমে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোর্তোজা তমাল আমাকে ফোন করে এ ছবিটি দেখেছে বলে প্রথম জানায়। মিনহাজুল আবেদিন চয়ন ছবিটি তোলার কথা স্বীকার করে জানান, ঢাকার পল্টনের একটি আগ্নেয়াস্ত্রের শো রুম থেকে ছবিটি তোলা। পরশ অস্ত্র হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময় আমিই ছবিটি তুলেছিলাম। তারপর ছবিটি অনেকের ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়েছিলাম। হয়তো কারও ম্যাসেঞ্জারে থাকা পুরনো সেই ছবিই কেউ ফেসবুকে ছেড়েছেন। তিনি ঢাকায় থাকেন উল্লেখ করে চয়ন বলেন, আমি রাজনীতির সঙ্গে তেমনভাবে জড়িত নই। পিকুল মৃধা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আর পরশ মৎস্যজীবী লীগ করেন। তার সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে কোনো বিরোধের কি আছে? এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা পিকুল বলেন, কে কার রাজনীতি করল তাতে কী যায় আসে? অস্ত্রটি কি আমি তার হাতে তুলে দিয়েছি? তিনি বিষয়টি শুনেছেন তবে দেখেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ফেসবুকে কে ছবিটি ছেড়েছে সেটি দেখে লাভ আছে? অস্ত্রটি তো তারই হাতে। এ জন্য তাকেই জবাবদিহি করতে হবে।

সর্বশেষ খবর