সোমবার, ১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান দায়ী

------ ড. তুহিন ওয়াদুদ

অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান দায়ী

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও রিভারাইন পিপল-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেছেন, আমাদের অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানই নদী হত্যায় জড়িত। যেমন- পানি উন্নয়ন বোর্ড অনেকগুলো নদীর উৎসমুখ বন্ধ করে দিয়েছে। বগুড়ার করতোয়া মেরে ফেলেছে। তিস্তার ১০-১৫টি শাখা নদীর মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক জায়গায় নদীতে আড়াআড়ি সড়ক করেছে এলজিইডি। কুড়িগ্রামে একটা নদীর ওপর আড়াআড়ি সড়ক করেছে, কোনো ব্রিজ নেই। পাবনায় ইছামতী নদীর ওপর আড়াআড়ি সড়ক করেছে, কোনো ব্রিজ নেই। গত মার্চে রংপুরে একটা নদীর ওপর আড়াআড়ি সড়ক করেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় নদী বন্ধ করে রাস্তা করেছেন। সরকারপ্রধানের সদিচ্ছা থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই নদীর দখলদার অথবা দখলদারদের পৃষ্ঠপোষক। এ কারণেই নদী উদ্ধার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একটা নদীর পার্শ্ববর্তী যত জায়গায় বৃষ্টি হয় তার সব পানি ওই নদীতে আসার কথা। কিন্তু উন্নয়নের সময় রাস্তা, বাড়িঘর তুলে পানি আসার পথগুলো বন্ধ করে দিয়েছি। নদী পানি কম পাচ্ছে। স্রোত না থাকায় তলদেশ ভরাট হচ্ছে। অথচ, নদী কিন্তু কেউ কখনো খনন করে দেয়নি। পানির স্রোতে প্রকৃতিগতভাবেই নদীগুলো গভীর। এখন কেন ভরাট হয়ে যাচ্ছে? কারণ নদী গতিশীল প্রবাহ ধরে রাখতে পানি পাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে আমাদের দরকার ছিল বিজ্ঞানসম্মতভাবে নদীর পরিচর্যার। উল্টো অনেক ক্ষেত্রে বিপরীতটা করেছি। নদী রক্ষা কমিশন নামে একটা প্রতিষ্ঠান হয়েছে, কিন্তু জনবল নেই। প্রতিষ্ঠানটা বড় হলে নিজেদের জনবল দিয়ে কাজগুলো করতে পারত। আবার শুধু নদী রক্ষায় বাংলাদেশে নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় শুধু নৌ চলাচল করতে পারবে এমন নদীগুলো নিয়ে ভাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কখনোই নদীর কাজ করে না। উল্টো মাঝেমধ্যে খনন করতে গিয়ে আরও ক্ষতি করে। এ সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্প ছিল ৬৪ জেলায় নদী ও খাল খনন। পাউবো সেটা করেছে, কিন্তু নদীর মাপ, সিএস নকশা ধরে কাজ করেনি। নদীগুলো কেটে বালু পাড়ে এমনভাবে রেখেছে যে, দেখলে মনে হবে খাল। তিনি বলেন, ড্রেজিং বিজ্ঞানসম্মত হওয়া দরকার। নদী রক্ষায়, ড্রেজিংয়ে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। যে সামান্য টাকা বরাদ্দ থাকে, তাতে কিছুই হয় না। খনন যেমন দরকার, তদারকিও দরকার। খনন করে নদীর প্রবাহকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত নিয়ে         যেতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর