সোমবার, ১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

কঠিন চ্যালেঞ্জে এরদোগান

প্রতিদিন ডেস্ক

কঠিন চ্যালেঞ্জে এরদোগান

তুরস্কে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। কিন্তু আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে এবার তিনি বিরোধীদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। বিবিসি। তুরস্কের ছয়টি বিরোধী দল আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে জোটবদ্ধ হয়েছে। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিরুদ্ধে তারা একক প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে বিরোধী নেতা কেমাল কিলিচদারুগলুকে। বিরোধী পক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট এরদোগানের দুই দশকের শাসনামলে তুরস্ক ক্রমশই একটি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এখন এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চায়। খবরে বলা হয়, দেশটিতে লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি এবং সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর এরদোগানের অবস্থা এখন অনেকটাই নাজুক। আসছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যত ভোট পড়বে, কোনো প্রার্থী যদি তার ৫০ শতাংশের বেশি পান- তাহলে তিনি সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। এরকম না হলে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। এ অবস্থায় এরদোগান কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ৬৯ বছর বয়সী এরদোগান এবার যতটা চাপের মুখে পড়েছেন, এর আগে এরকম কখনো হয়নি। জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী জোটের প্রার্থী তার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। এরদোগানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ২০০২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ক্ষমতায় এবং এরদোগান তুরস্ক শাসন করে আসছেন ২০০৩ সাল থেকে। এবারের নির্বাচনে প্রায় ৬০ লাখ নতুন ভোটার ভোট দেবেন, যারা এরদোগান ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক নেতাকে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে দেখেননি। এরদোগান শুরুতে ছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হন এবং ২০১৬ সালে ব্যর্থ এক সামরিক অভ্যুত্থানের পর নাটকীয়ভাবে তিনি তার ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। হয়ে ওঠেন একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। এখন তিনি বিশাল একটি প্রাসাদ থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। দেশটির বেশির ভাগ মিডিয়াই তার মিত্রদের নিয়ন্ত্রণে। তবে প্রচুর সংখ্যক তুর্কি নাগরিক দেশটিতে লাগামহীন মূল্যস্ফীতির জন্য এরদোগানকে দায়ী করেন। কারণ তিনি ব্যাংকের সুদের হার বাড়াতে রাজি হননি। বর্তমানে তুরস্কে সরকারিভাবে মূল্যস্ফীতির হার ৫০ শতাংশের বেশি। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই হার আসলে ১০০ শতাংশেরও বেশি। তুরস্কে ৬ ফেব্রুয়ারির এক জোড়া ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর এরদোগান ও তার নেতৃত্বাধীন শাসক দলের ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। তার সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকার উদ্ধার তৎপরতা চালাতে ব্যর্থ হয়েছে। আরও অভিযোগ উঠেছে, নির্মাণ খাতে বড় ধরনের অনিয়মের কারণেই ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, এরদোগানের প্রতি প্রচুর সমর্থন থাকার কারণে এসব প্রদেশের কয়েকটিকে তার পার্টির ঘাঁটি হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু এখন ধারণা করা হচ্ছে, এসব প্রদেশের বিক্ষুব্ধ ভোটারের রায়ের ওপরই এরদোগানের জয়-পরাজয় নির্ভর করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর