বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
ইউনিসেফের প্রতিবেদন

৫১ শতাংশ নারীর বিয়ে অল্প বয়সে

প্রতিদিন ডেস্ক

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নতুন এক বিশ্লেষণ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে অষ্টম। দেশটিতে ৫১ শতাংশ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের শৈশবে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি।

গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তথ্যের উৎস হিসেবে ২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে ১৮ বছর হওয়ার আগে এবং ১ কোটি ৩ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগে। বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘শিশুদের বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের সংখ্যা বিস্ময়কর। লাখ লাখ মেয়ের শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মেয়েরা যাতে স্কুলে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে এবং তারা যাতে বেড়ে উঠতে পারে, সে সুযোগ দিতে আমাদের জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার।’ একই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে গত এক দশকে বাল্যবিয়ে ধারাবাহিকভাবে কমছে। এ হার কমে আসায় বড় ভূমিকা রাখছে দক্ষিণ এশিয়া। অগ্রগতি সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ায় এখনো প্রতি চার তরুণীর মধ্যে একজনের বিয়ে হচ্ছে তার ১৮তম জন্মদিনের আগেই। এ অঞ্চলে বর্তমানে যে গতিতে বাল্যবিয়ে কমছে, তাতে সেখানে এ ধরনের বিয়ে পুরোপুরি বন্ধ হতে প্রায় ৫৫ বছর লাগতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বে এখন যত বাল্যবধূ রয়েছে, তাদের ৪৫ শতাংশই এ অঞ্চলের। যদিও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ভারত এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা সত্ত্বেও এখনো বিশ্বের মোট বাল্যবধূর এক-তৃতীয়াংশই এ দেশের।

বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত সর্বশেষ বৈশ্বিক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বর্তমানে জীবিত প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের ছোটবেলায়। অথবা বলা যায়, প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ছোটবেলায়। পাঁচ বছর আগে এ বিষয়ে সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যাওয়া তরুণীর সংখ্যা ২১ শতাংশ। এবার তা ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এ অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী বাল্যবিয়ে কমানোর গতি ২০ গুণ বাড়াতে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা প্রমাণ করেছি, বাল্যবিয়ে বন্ধে অগ্রগতি সম্ভব। তবে এ জন্য বাল্যবিয়ের ঝুঁকিতে থাকা মেয়ে ও পরিবারগুলোর জোরালো সমর্থন প্রয়োজন। মেয়েদের স্কুলে টিকিয়ে রাখার বিষয়ে এবং তাদের অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিত করার দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।’

 

সর্বশেষ খবর