সোমবার, ৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন খাতে চাপ অব্যাহত থাকবে

আইএমএফের আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নানামুখী চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। দীর্ঘ সফর শেষে ঢাকা ছাড়ার প্রাক্কালে গতকাল এক লিখিত বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান ও মিশনপ্রধান রাহুল আনন্দ। তিনি বলেন, বিশ্বের এই চ্যালেঞ্জিং অর্থনীতিতেও বাংলাদেশ একটি বর্ধনশীল দেশ। তবে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন খাতের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে এ দলটি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করতে ২৫ এপ্রিল ঢাকায় আসেন। দুই সপ্তাহব্যাপী এ সফরে তারা অর্থ বিভাগ, ব্যাংকিং বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন। আইএমএফ বলেছে, বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখেও এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয়  অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যারা দ্রুত হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জন্য তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করে আইএমএফ। সেগুলো হলো- ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈশ্বিক আর্থিক খাতের অস্থিরতা বৃদ্ধি ও গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি। আইএমএফ মনে করছে, এসব কারণে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও স্থানীয় মুদ্রা টাকার ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে। কেননা বৈদেশিক মুদ্রার আয় আশানুরূপ বাড়ছে না।

ওয়েবসাইটে উল্লিখিত ও সংবাদমাধ্যমে পাঠানো লিখিত বক্তব্যে সংস্থাটি জানায়, ‘সফরের সময় আমরা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা তহবিল-সমর্থিত প্রোগ্রামের অধীনে মূল প্রতিশ্রুতি পূরণের অগ্রগতিও পর্যালোচনা করেছি। এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) বা এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) বা রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) ব্যবস্থার প্রথম পর্যালোচনায় এটি আনুষ্ঠানিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে, যা এ বছরের শেষের দিকে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’ গত বছর ২৪ জুলাই ঋণ চেয়ে আইএমএফের কাছে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। এতে পরিমাণের কথা উল্লেখ ছিল না। পরে ১২ অক্টোবর ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ-সহায়তার কথা উল্লেখ করেন। এরপর চলতি বছর ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। এ ঋণের প্রথম কিস্তি ইতোমধ্যে ছাড় করা হয়েছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত আইএমএফের এ কর্মসূচি চালু থাকার কথা রয়েছে। প্রতি ছয় মাস পর এই ঋণের প্রতিটি কিস্তি ছাড় করার কথা রয়েছে। এদিকে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজেমি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঘোষিত ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির বিষয়ে এবার আলোচনা হয়নি। আইএমএফ প্রতিনিধি দল তাদের শিডিউল সফরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সফর করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের নেওয়া সব বিষয় তাদের সামনে তুলে ধরেছি। তারা আমাদের নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে দ্বিমত করেনি। তবে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার বিষয়টা আরও পরে। আইএমএফ মিশন দল অক্টোবরে আবারও বাংলাদেশ সফরে আসবে। তখন এ বিষয়ে জানা যেতে পারে। কারণ সেটিই হবে মূল বৈঠক।’

সর্বশেষ খবর