শিরোনাম
সোমবার, ৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত সেই তিন খুনি

কুমিল্লায় বোরকা পরে এসে যুবলীগ নেতাকে হত্যা

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যার মামলায় তিতাস উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল সিকদারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এ ছাড়া সিসিটিভির ১৩টি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে র‌্যাব বোরকা পরা তিনজনকে শনাক্ত করেছে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-১ এর কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মোহাম্মদ পাশা। তিনি জানান, এ মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৩ নম্বর আসামি ইসমাইল হোসেন (৩৬), ৪ নম্বর আসামি সোহেল শিকদার (৪৬), ৭ নম্বর আসামি মো. শাহ আলমকে (৩৮)। ইসমাইলকে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ থেকে, বাকি দুজনকে ঢাকার রায়েরবাগ এবং কালশী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইসমাইলের বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ তিনটি, সোহেল শিকদারের বিরুদ্ধে তিনটি হত্যাসহ নয়টি ও শাহ আলমের বিরুদ্ধে একটি হত্যাসহ ১০টি মামলা রয়েছে।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরও জানান, এজাহারে যাদের নাম আছে তাদের মধ্যে পাঁচজন বিদেশে রয়েছেন। এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি সুজন ও ২ নম্বর আসামি আরিফ নেপালে, ৫ নম্বর আসামি বাদল দুবাইয়ে, ৬ নম্বর আসামি শাকিল ভারতে, ৮ নম্বর আসামি অলি হাসান সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। তারা কেউ হত্যাকান্ডের আগে, কেউ পরে বিদেশে চলে যান। এ ছাড়া ৯ নম্বর আসামি কালা মনির আত্মগোপনে আছেন। ঘটনার ব্যাপারে গ্রেফতারকৃত আসামিরা জানিয়েছেন, তারা কেউ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেননি। তবে তারা জানান, তাদের মধ্যে বহুদিনের অন্তর্দ্বন্দ্ব ছিল। র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, যারা গুলি করেছেন, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তাদের নাম বলা যাচ্ছে না। সূত্র জানায়, সিসিটিভির ১৩টি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে র‌্যাব। ফুটেজে দেখা গেছে, গৌরিপুর বাজার মাদরাসার গলি দিয়ে বোরকা পরিহিত তিনজন বের হচ্ছেন। তাদের সামনে একটি অটোরিকশা সামনে অগ্রসর হয়। এর কিছু সময় পর হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার স্থানে ৩ নম্বর আসামি ইসমাইলকে দেখা যায়। ইসমাইল অটোরিকশায় থেকে জামালের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর লুঙ্গি ও টুপি পরিহিত একজনসহ কয়েকজন জামালকে দোকানের পাশের একটি গলিতে নিয়ে যান। এর একটু পর জামাল বেরিয়ে এসে দোকানের সামনে দুই-তিন সেকেন্ড থেমে সামনে পা বাড়াতেই বোরকা পরিহিতদের সামনে অগ্রসর হতে দেখা যায়। তারা সামনে আসতেই দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি অটোরিকশা সামনে অগ্রসর হয়ে পেছনে চলে আসে। হত্যাকান্ডের আগে বোরকা পরিহিত একজনকে জাপটে ধরে জামাল। আরেকজন জামালকে লাথি দিয়ে ফেলে দেয়। তারপর চলে গুলি। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পেছনে কয়েকজন ধাওয়া দেয়। এ সময় অস্ত্রধারীরা পেছনের দিকে পিস্তল তাক করতেই ধাওয়াকারীরা পিছু হটেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনের মুখোশ খুলে যায়। তার পিস্তল হাত থেকে পড়ে যায়। আরেকজন পিস্তল কুড়িয়ে নেন। মুখোশ খুলে গেলে অস্ত্রধারীর ছোট চুল দেখা যায়। চুল দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় অস্ত্রধারীরা পুরুষ। এরপর কিছুটা ভিন্ন রাস্তা হয়ে তারা আগের জায়গায় ফিরে আসেন। সেখানকার একটি অস্পষ্ট ফুটেজে তাদের বোরকা ছাড়া দেখা যায়। তিনি জানান, বোরকাগুলো একটি ডোবা থেকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরিপুর বাজারে হত্যা করা হয় জেলার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে। তিনজন বোরকা পরিহিত ব্যক্তি তাকে গুলি করে।

সর্বশেষ খবর