মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
লন্ডনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

জনগণ নৌকায় ভোট দেবে

তারেক লন্ডনে এত টাকা কোথায় পায়

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

জনগণ নৌকায় ভোট দেবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াত চক্রকে ভোট চোর হিসেবে আখ্যায়িত করে দেশবাসীকে তাদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা দেশকে ধ্বংস করতে চায়। তিনি বলেন, সব সময় জনগণের পাশে থাকায় আগামী সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে। জনগণ আমাদের তাদের সেবা করার সুযোগ দেবে। গতকাল সেন্ট্রাল লন্ডনের ম্যারিয়ট হোটেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা লন্ডন সময় বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন। তিনি প্রায় ১ ঘণ্টা ২৩ মিনিট কথা বলেন। বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার কথা স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে দুর্নীতিতে পর পর পাঁচবার প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে চলে আসে তারেক রহমান। আর এখানে এসে ল্যাভিশ জীবন-যাপন করছে সে। তার এত টাকা কোথা থেকে আসে। এত টাকা সে কোথায় পায়। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্জন আজ সারা পৃথিবী দেখছে। বিএনপির সময়ের ডাটার (তথ্য-উপাত্ত) সঙ্গে বর্তমান সময়ের খাদ্য, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, বাসস্থান সবকিছুর তুলনা করলেই দেখা যাবে আওয়ামী লীগ সরকার কতটা কাজ করেছে বর্তমান সময়ে। জাতির পিতার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে ভঙ্গুর অর্থনীতিকে তিনি টেনে তুলেছিলেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান নামে মুক্তিযোদ্ধা হলেও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার একজন এজেন্ট ছিল, এ কথা বললে ভুল হবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন বাংলাদেশে গণহত্যা চালাচ্ছে, সেই সময় পাকিস্তানের এক অফিসার বাংলাদেশে কর্তব্যরত জিয়াউর রহমানকে একটি চিঠি লিখেছিল। আর সেই চিঠিতে জিয়াউর রহমান যে ভালো কাজ করছে তার উল্লেখ করা হয়। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মোশতাকসহ একটি দল দেশের অনেক ক্ষতি করে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জিয়াউর রহমান সংবিধানের নিয়ম পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছিল। ভোট চুরি ও ডাকাতি করার প্রক্রিয়া জিয়াউর রহমান শুরু করে গেছে। জিয়াউর রহমান হত্যাকারী। অনেক লাশ গুম করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, টাকার বিনিময়ে নমিনেশন বিক্রি করে তারেক রহমান। সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সে মুচলেকা দিয়েছিল আর রাজনীতি করবে না। এখন লন্ডনে আছে। তাই অবশ্যই প্রশ্ন ওঠে এত টাকা কোথায় পেল যে তারেক লন্ডনে এমন অপরিমিত অর্থ ব্যয় করে জীবন-যাপন করে। তিনি বলেন, তারেক রহমানরা তো ভোট চোর নয়, তারা ভোট ডাকাত। জিয়াউর রহমান ভোটের নিয়ম ভেঙেছে। তিনি বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপি দেশে ১০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি রেখে যায়। আমরা বিএনপির মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে ২০২১ পর্যন্ত ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশে রেখেছিলাম। বর্তমানে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব সমস্যায়। আমাদের মুদ্রাস্ফীতি তারপরও ৮-এর ওপরে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির বাজেট ছিল ৬১ হাজার কোটি টাকা। আমাদের বাজেট ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে। ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএনপির সময় মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। আমরা সেটাকে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার করেছি। তিনি বলেন, বিএনপির আমলে জিডিপির আকার ছিল ৪ লাখ ১৫ হাজার ৭২ কোটি টাকা। আর আমাদের জিডিপির সাইজ ৪৬ লাখ কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। আমরা ‘ডেল্টা ২১০০’ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, দেশে আর কোনো গৃহহীন, ভূমিহীন মানুষ থাকবে না। আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। বাংলাদেশের কোনো মানুষের আর খাদ্যের অভাব থাকবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে ৫০ বছরের ইতিহাসে একবারই শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। আর তা করে আওয়ামী লীগ সরকার। খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগকে ভোট চোর বলে। তারা কোন মুখে ভোট চোর বলে। তারেক রহমান একজন ভোট চোর এবং তার মা-ও ভোট চোর। সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপি-জামায়াতের মতো আওয়ামী লীগ ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ সব সময় দেশ ও দেশের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করে; জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তারা ভোট চোর, জিয়া খুনি। তারা শুধু মানুষকেই হত্যা করেনি, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আপনারা সব সময় আমাদের বিপদের সময় পাশে ছিলেন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর