শনিবার, ২০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
ঢাকায় পাল্টাপাল্টি আওয়ামী লীগ বিএনপি

আগুনসন্ত্রাস হলে হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে

শান্তি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগুনসন্ত্রাস হলে হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শান্তি সমাবেশে বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের

২০১৩ সালের মতো আবারও আগুনসন্ত্রাস করলে হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে বলে বিএনপির প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, যারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় রাজপথ রক্তাক্ত করেছে, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যতই চিৎকার করুন ২০১৩-১৪ এর মতো আবার যদি আগুন নিয়ে মানুষ পোড়াতে আসেন, যে হাতে আগুন সে হাত আমরা পুড়িয়ে দেব। দেশে আবার যদি বিএনপি আন্দোলনের নামে ভাঙচুর করতে আসে, যে হাতে ভাঙচুর করবে সে হাত আমরা ভেঙে দেব। গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ ঘিরে জুমার নামাজের পর থেকে বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড থেকে বের হয় খন্ড খন্ড মিছিল। বিকালের আগেই হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থকের উপস্থিতিতে বিশাল জনসভায় পরিণত হয় ২৩ নম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ।  ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডু প্রমুখ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং ঐতিহাসিক হবে জানিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাকে ‘মাথা না ঘামানোর’ পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কারও জন্য বসে থাকবে না। দুনিয়ার অন্য সব গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে হবে। বিদেশি বন্ধুদের বলব, বিএনপি আপনাদের কাছে যতই নালিশ করুক, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের দেশে অবাধ, সুষ্ঠু একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন হবে আগামী নির্বাচন। আপনাদের কারও এ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই।

বিএনপিকে ‘কোমরভাঙা দল’ অভিহিত করে তাদের ‘কাকুতিমিনুতি’ না শুনতে বিদেশি কূটনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এদের কথা শুনে লাভ নেই। জনগণের সঙ্গে গিয়ে কথা বলুন। তারা কী চায়। বিএনপি জানে না তারা কী চায়। বিএনপি আন্দোলনে জয়ী হবে তা এখন তার কর্মীরাও বিশ্বাস করছে না বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব যত লাফালাফি করুন আন্দোলনের দিন শেষ। পদযাত্রা মানববন্ধন করেন, আন্দোলনের জন্য মানুষ আর আসবে না। মানুষ বুঝে গেছে কোমরভাঙা দল বিএনপিকে দিয়ে কিছুই হবে না। বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে না। তিনি বলেন, এটা সারা দেশে প্রমাণ হয়ে গেছে যে, বিএনপি আন্দোলনে পরাজিত। নির্বাচনেও তারা আওয়ামী লীগের ধারেকাছেও যেতে পারবে না। এ জন্যই তারা নানা ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচিকে ‘অন্তিমযাত্রা’ আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ওপরে ওপরে পদযাত্রা আর তলে তলে সহিংসতা। ওপরে দেখাচ্ছে আমরা নরম ভিতরে ভিতরে আগুনসন্ত্রাসের প্রস্তুতি নিচ্ছে।’ গুলশান ও  নয়াপল্টন বিএনপির দুটি অফিসকে গুজব আর মিথ্যার কারখানা অভিহিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নেতারা গুলশানে একটি গুজবের কারখানা করেছেন। সেখান থেকে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয়। অনলাইনে আজগুবি যতসব মিথ্যা কথা বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে। মিথ্যাচারের আরেকটি ফ্যাক্টরি নয়াপল্টনে। সেখান থেকে ষড়যন্ত্র আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে নালিশের রাজনীতি করছে। ক্ষমতায় আসতে টাকা ছড়িয়ে লবিং করছে, ষড়যন্ত্র করছে। এ সময় মির্জা ফখরুলের এক মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, রোষানলে কারা পড়েছে? জনতার রোষানলে কারা পড়েছে? মানুষের জানমালের নিরাপত্তা যারা বিঘিœত করছে, রাস্তা বন্ধ করে যারা পদযাত্রা করছে; তাদের ওপর মানুষ বিরক্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, সারা দেশে প্রমাণ হয়ে গেছে বিএনপি আন্দোলনের দল নয়। ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রাখেন, আন্দোলনে নেতা নেই, নির্বাচনে নেতা নেই, কাকে নিয়ে ভোট করবেন? কাকে নিয়ে শেখ হাসিনাকে হটাবেন? অস্ত্র উঁচিয়ে, পেট্রোল বোমা মেরে আন্দোলন করতে চাইলে জনগণ রুখে দাঁড়াবে। খেলা হবে। খেলা হবে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে, চক্রান্তের বিরুদ্ধে, ভোটচুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে। যারা এ দেশের সহস্র মায়ের বুক খালি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। তার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর