ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে। আমাদের দেশ এখন সব দিক দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশে শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। এগুলো আমাদের অগ্রগতি। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এ উন্নয়ন উইপোকা খেয়ে ফেলছে। এই উইপোকা হচ্ছে, অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটপাটকারী, ঋণখেলাপি। দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় লোকের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। শুক্রবার বিকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অনেক সাফল্য এসেছে। বিগত কয়েক বছরে আমাদের দেশের অর্থনীতি অনেক এগিয়েছে। অর্থনীতির চাকা সচলের পেছনে অন্যতম কারিগর আমাদের দেশের মেহনতি শ্রমিক, কৃষক, গার্মেন্ট শ্রমিক, প্রবাসী শ্রমিকরা। প্রধানমন্ত্রী দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করছেন বলেই কাক্সিক্ষত দেশ গঠনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু মুষ্টিমেয় লোক যেসব সম্পদ উপার্জন করেছে, সেগুলো দুর্নীতি, ঋণখেলাপি ও বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে অর্জন করেছে। আমরা সরকারে থেকেই এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম, এখনো আছি। আমরা বারবার বলছি, দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক ডাকাত ঋণখেলাপি, অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। এদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে নৌকা নিয়ে নির্বাচিত ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের কাছে প্রশ্ন ছিল আগামীতে কোন প্রতীক নিয়ে ভোট করবেন? জবাবে তিনি বলেন, আমরা চাই দলীয় প্রতীক নিয়ে ভোট করতে। কিন্তু সংসদ নির্বাচনের সময় জোটের প্রতীক কোনটা হবে- সেটি আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নৌকা হলে নৌকা নিয়েই ভোট করব। আর যার যার দলের প্রতীক নিয়ে করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে সেটার জন্যও প্রস্তুত। সময়ই বলে দেবে- কোন প্রতীক নিয়ে ভোট করব। তাহলে কি জোট ছাড়া ভোট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন? জবাবে সরকারের সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, আমরা ১৪ দলভুক্ত হয়েই ভোট করব। আলাদা নির্বাচন করার কথা ভাবছি না। জোটের শরিক দলের নেতারা কেউ সরকারে নেই এবার- কী পেলেন- জবাবে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, চাওয়া পাওয়ার জন্য তো জোট করিনি। জোট করেছিলাম কিছু নির্দিষ্ট এজেন্ডা সামনে রেখে। আমাদের লক্ষ্য ছিল অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক উন্নয়নমূলক সমাজ গঠনের। যদিও জোটের শুরুতে বলা হয়েছিল, একসঙ্গে আন্দোলন, একসঙ্গে নির্বাচন, একসঙ্গে সরকার গঠন। এখন জোটের মূল দল (আওয়ামী লীগ) যদি মনে করে তারাই একাই যথেষ্ট- তাহলে সেটা তাদের ব্যাপার। আমরা রাজনীতির কারণে জোটভুক্ত হয়েছি। বর্তমান সরকারের সাড়ে চার বছর নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী জানতে চাইলে মেনন বলেন, সরকার পরিচালনায় সাফল্য যেমন আছে, ব্যর্থতাও আছে। উন্নয়ন অগ্রগতির পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে না ধরতে পারা সরকারের ব্যর্থতা। সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এগুলো সরকারকে আমলে নিতে হবে। তিনি বলেন, এককভাবে দেশ পরিচালনা করায় কিছু সমস্যা দেখা যাচ্ছে। মানুষের বাস্তব সংকটগুলো সমাধানে গুরুত্ব দিতে হবে।