সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

দক্ষিণে ভোটের পরীক্ষা আজ

সাড়ে ৩ হাজার সিসি ক্যামেরায় ঢাকা থেকে পর্যবেক্ষণ

গোলাম রাব্বানী

গাজীপুরের পর দক্ষিণের দুই সিটিতে আজ পরীক্ষার মুখোমুখি হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সংসদ নির্বাচনের আগে সিটি ভোটের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ফেরাতে চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন। সিটি ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। ইসি বলেছে- আজ খুলনা-বরিশাল সিটি করপোরেশনে গাজীপুর সিটির চেয়ে ভালো নির্বাচন হবে। আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) দুই সিটিতে টানা ভোট গ্রহণ হবে। সাধারণ ছুটি থাকছে নির্বাচনী এলাকায়। ঢাকা থেকে ৩ হাজার ৪৫৪টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া দুই সিটিতে ইসির ৪১ জন নিজস্ব কর্মকর্তা পর্যবেক্ষণে মাঠে থাকছেন। তারা ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি তাৎক্ষণিকভাবে ইসিকে অবহিত করবেন।

এদিকে আজ দুই সিটির পাশাপাশি কক্সবাজার ও আড়াইহাজার পৌরসভায় ইভিএমে নির্বাচন হবে। এ ছাড়া ১টি উপজেলা, ২৩ ইউনিয়ন পরিষদ, ঢাকা উত্তর সিটির ১৫ নম্বর ওয়ার্ড এবং ২টি পৌরসভার কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচন হবে। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলেছেন, সিটি নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণে ইসির মূল পরীক্ষা হচ্ছে ‘গোপন বুথের ডাকাত’ ঠেকানো। সদ্য সমাপ্ত গাজীপুর সিটি ভোটেও গোপন বুথে ঢুকে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছিল এজেন্টদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরায় ভোট দেওয়ার ‘গোপন বুথে ডাকাত দেখে’ গত বছরের অক্টোবরে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বন্ধ করেছিল নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে দুই সিটি ভোটে গোপন বুথে ডাকাত থাকা তথা গোপন বুথে ঢুকে একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার শঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রার্থীরা। যদিও সিলেটে গিয়ে সিইসি বলছেন, কেউ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ পাবে না। কেউ যদি কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে না পারেন, তাহলে চিৎকার দেবেন। আমরা সিসি ক্যামেরায় তা দেখে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব। গত ২৫ মে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের চেয়ে বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশনে ভোট ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান। তিনি গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনে বিধি-বিধান প্রতিপালনে আমাদের অবস্থান কঠোর ছিল। খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রতিটি পদক্ষেপেই আমরা সুতীক্ষèè নজর রেখে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। ভোটের দিনও আমরা সরাসরি সিসি ক্যামেরায় এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করব। এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমাদের নির্দেশনা প্রশাসন, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা শতভাগ পালনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আমাদের বার্তা স্পষ্ট ছিল- আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করেছি এবং নির্বাচন প্রচারণায় অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলা করলে কোনো ধরনের ছাড় দেই নাই। বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধের জন্য চেকপোস্ট করা হয়েছে। বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন গাজীপুরের নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে বলে বিশ্বাস করি। অনিয়মের সঙ্গে কেউ জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে অতীতের চেয়ে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।  সিটি ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করেছে ইসি। এক্ষেত্রে বরিশাল সিটিতে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল ফোর্স ৩০টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১০টি, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স ৩টি; র‌্যাবের ১৬টি টিম এবং ১০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য থাকছে। একইভাবে খুলনায় পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল ফোর্স ৩১টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১১টি, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স ৭টি;  র‌্যাবের ১৬টি টিম এবং ১১ প্লাটুন বিজিবি সদস্য থাকছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর