মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোটে সন্তুষ্ট ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বরিশাল-খুলনা সিটি করপোরেশনসহ দুই পৌরসভায় ‘আনন্দমুখর’ পরিবেশে ভোট হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সিইসি বলেন, দু-চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সার্বিকভাবে সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে।

গতকাল ভোট শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এদিকে বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশনে কল্পনার বাইরে ভোটার উপস্থিতি বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান। দুপুরে নির্বাচন ভবনে তিনি এ কথা বলেন। এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সিইসিসহ আমরা প্রত্যেকটি সিসি ক্যামেরা মনিটরিং করছি। সকাল থেকে এত বেশি ভোটার উপস্থিতি কল্পনার বাইরে। আমাদের শান্তি দিয়েছে এটা যে, কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা ভোটারদের আশ্বস্ত করেছে এবং তাদের ভোট কেন্দ্রে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে।’ সিইসি বলেন, দু-চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সার্বিকভাবে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ এ ভোটে খুলনায় গড়ে মেয়র পদে প্রায় ৪২-৪৫ শতাংশ এবং বরিশালে গড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট পড়তে পারে বলে তারা ধারণা করছেন। পৌরসভা দুটিতে ভোটের এ হার হতে পারে ৫৫ শতাংশ।

একজন মেয়র প্রার্থীকে রক্তাক্ত করা হলেও এ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ বলা যায় কি না?- প্রশ্নে বিকালে সিইসি বলেন, “এটা আপেক্ষিক। রক্তাক্ত সবকিছু আপেক্ষিক, উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? আমরা দেখেছি- না, উনার রক্তক্ষরণটা দেখিনি। যতটা শুনেছি-উনাকে কেউ পেছন থেকে ঘুষি মেরেছে। উনিও বলেছেন, ভোট বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না, তাকে আক্রমণ করা হয়েছে।”

বরিশালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থীর ওপর এ হামলার ঘটনার পর নির্বাচন শেষে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না ঘটে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন এবং কক্সবাজার ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভায় ভোট হয়। সেসব এলাকার ভোট পরিস্থিতি ঢাকা থেকে সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করে কমিশন। সকাল থেকেই নির্বাচন ভবনে সিইসি, নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর এবং ইসি সচিব, এনআইডি উইং মহাপরিচালক ও মনিটরিং সেলের প্রধান মিলে ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

ভোট শেষে সিইসি বলেন, যেটা দেখেছি- আমরা সন্তুষ্ট বোধ করছি। সার্বিকভাবে নির্বাচনটা আজকে হয়েছে তা বেশ সুশৃঙ্খল, আনন্দমুখর পরিবেশে হয়েছে। গণমাধ্যমসহ সবখানে ইতিবাচক সংবাদ পেয়েছি। দু-চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। এটা আশাব্যঞ্জক।” ভোটে অনিয়ম ও কেন্দ্রের গোপন কক্ষে ‘ডাকাতে’র উপস্থিতির মতো কোনো ঘটনা দেখা যায়নি বলে জানান তিনি। বরিশালে মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা দেখেছি, শুনেছি-বরিশালে হাতপাখার প্রার্থীকে খানিকটা আঘাত করা হয়েছে। এতে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল বা সে উত্তেজনা এখনো হয়তো প্রশমিত হয়নি। এখান থেকে বলা হয়েছে- এ ধরনের আশঙ্কা থেকে নির্বাচনোত্তর যেন সহিংসতা না ঘটে, কোনো রকম উচ্ছৃঙ্খল আচরণ যেন না হয়। অনেক সময় ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরে এ ধরনের ঘটনা ঘটে- সে প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি আশা রাখেন, হয়তো আর কোনো ঘটনা ঘটবে না। মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলার খবর জানার পরপরই ভোট কার্যক্রম ওই কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে কি না কমিশন সঙ্গে সঙ্গে তা খোঁজ নিয়েছে, দেখেছে তাতে ভোট বাধাগ্রস্ত হয়নি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। “উনাকে (মেয়র প্রার্থী) যে আহত করা হয়েছে, এখান থেকে সুস্পষ্টভাবে পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং অফিসার সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। যে দায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায় দায়িত্ব নিরূপণ করার পরে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। আরও তথ্য পরবর্তীতে পাব। দায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে।”

সর্বশেষ খবর