বুধবার, ১৪ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় কমেছে উপস্থিতি

খুলনা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

২০১৮ সালে খুলনা সিটি নির্বাচনে প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫১ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে প্রায় ৬৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন তিনি। এবারের নির্বাচনে তালুকদার আবদুল খালেক পুনরায় সিটি মেয়র নির্বাচিত হন। এবার ভোট পড়েছে ৪৮ দশমিক ১৭ ভাগ। তালুকদার খালেক পেয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট। গত নির্বাচনের চেয়ে ৪০ হাজার নতুন ভোটার বাড়লেও তালুকদার খালেকের ভোট কমেছে ২০ হাজার ২৬। তবে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে তার ভোটের ব্যবধান বেড়ে হয়েছে ৯৪ হাজার ৭৬১। বিশ্লেষকরা বলছেন, খুলনায় নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় একদিকে ভোটার উপস্থিতি কমেছে। সেই সঙ্গে দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান বেড়েছে অনেক। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) খুলনা জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, গতবারের তুলনায় এবার নির্বাচন ছিল নিরুত্তাপ। নির্বাচনে জনগণের আকাক্সক্ষা দেখা যায়নি। তিনি বলেন, নির্বাচনে সমযোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীর প্রয়োজন হয়, তখন বাগবিতন্ডা তৈরি হয়। ভোট প্রদানে প্রার্থী পছন্দের বিষয়টি আসে। এবার নির্বাচনে অন্য যারা প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তাদের সঙ্গে তালুকদার আবদুল খালেকের ব্যবধান অনেক বেশি ছিল।

পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চ খুলনার সাধারণ সম্পাদক সুতপা বেদজ্ঞ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকলে মানুষ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়। এবার বড় দলগুলো বর্জন করায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ ছিল খুবই কম। তিনি বলেন, ৫ লাখ ৩৫ হাজার ভোটারের মধ্যে ২ লাখ ৫৬ হাজার ভোট পড়েছে। অর্থাৎ প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার ভোটার ভোট দিতে যায়নি। তালুকদার আবদুল খালেক কম ভোট পেয়েছেন, তা আবার জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছে। কোথা থেকে এলো এত ভোট : নির্বাচনে পরাজিত মেয়র প্রার্থী জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু অভিযোগ করে বলেছেন, ইভিএমে ভোট বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমি ভোটের দিন সকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি, অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি, এত ভোট কাস্ট হওয়ার কথা নয়। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বুথগুলোতে ৩০০ ভোটের মধ্যে কোথাও ৩০টা, ৪০০ ভোটের মধ্যে কোথাও ১৫ ভোট পড়ে। যার তথ্য আমি সংগ্রহ করেছি, কিছু ছবি তুলে এনেছি। শেষদিকে কেন্দ্রগুলো ছিল ভোটারশূন্য। কিন্তু ফলাফল ঘোষণায় ৪৭-৪৮ পার্সেন্ট ভোট দেখানো হয়েছে। এত ভোট কোথা থেকে এলো।

মুশফিকের সংবাদ সম্মেলন : স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান মুশফিক গতকাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, খুব বেশি হলে ২২ ভাগ ভোট পড়েছে। কিন্তু ৪৮ ভাগ ভোট দেখানো হয়েছে। এটি ইভিএমে জালিয়াতি ও ভৌতিক ফলাফল। তিনি নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। একই সঙ্গে অরাজনৈতিক দল ‘সেভ দ্য পিপল’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন মুশফিক।

বাকি কাজ শেষ করব -খালেক : সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক গতকাল তার বাড়িতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সিটি করপোরেশনের চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নে আমি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। এখন আড়ইশ থেকে ৩০০ রাস্তা-ড্রেন-খালে সংস্কার কাজ চলমান। বাকি কাজেরও টেন্ডার দেওয়া হবে। আমি চলমান কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে চাই। এসব কাজ শেষ হলে খুলনার চেহারা পাল্টে যাবে।

সর্বশেষ খবর