সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

হস্তক্ষেপের কাছে মাথা নত নয় : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

হস্তক্ষেপের কাছে মাথা নত নয় : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ কখনোই বাইরের কোনো হস্তক্ষেপের কাছে মাথা নত করবে না।

গতকাল স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তার অফিসে আয়োজিত বিশেষ দরবার (সমাবেশ) অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারও হস্তক্ষেপের  কাছে মাথা নত করব না। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটি স্বাধীন জাতি। আমরা যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশ অর্জন করেছি। বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রণীত ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব এবং কারও সাথে বৈরিতা নয়’ নীতি অনুসরণ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার গুরুত্বপূর্ণদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে কাজ করছে। দেশের উন্নয়নে যা যা প্রয়োজন তা করছে। তিনি বলেন, অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ বারবার প্রতিবন্ধকতা ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েছে কিন্তু সফলতার সঙ্গে সেগুলো কাটিয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, এখনো অনেক বাধা এবং ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। কারণ একটি দেশ যখন দ্রুত অগ্রগতি করে, তখন অনেকেই তা সহ্য করতে পারে না। তারা বিভিন্ন ঝামেলা শুরু করে। একটি স্বাধীন ও বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বমঞ্চে মাথা উঁচু করে দেশের সব মানুষকে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা নিয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এগুলো (বাধা-বিপত্তি) নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আধুনিক প্রযুক্তির কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর অপব্যবহার রোধে সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, প্রযুক্তি আমাদের উন্নয়নের পথ খুলে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের এ ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে, যাতে এই প্রযুক্তি দেশের মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। প্রযুক্তি অনেক আশঙ্কা তৈরি করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ধরনেরও পরিবর্তন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য এসএসএফ সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের সঠিক নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা, পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতার মাধ্যমে এসএসএফ দিনে দিনে উন্নতি করতে থাকবে। এসএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসে শেখ হাসিনা বাহিনীর শৃঙ্খলা, আনুগত্য ও পেশাদারিত্বের দিক থেকে একটি আদর্শ নিরাপত্তা বাহিনীতে পরিণত হবে বলে আশা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি, ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়, সমুদ্র সীমানা নিয়ে বিরোধ মীমাংশা এবং পদ্মা সেতু নির্মাণের পাশাপাশি একই দিনে ১০০টি সেতু ও ১০০ সড়ক উদ্বোধনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, তারা বিশ্বব্যাংক উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। কারণ এ ব্যাপারে তাঁর সরকারের কোনো দুর্বলতা ছিল না। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ সক্ষমতা দেখিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সবার কাছে সম্মান পাচ্ছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে এসএসএফ এবং এর কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান সংকলিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭৫টি বাণী সংবলিত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর উক্তি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। ১৯৮৬ সালের ১৫ জুন রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনী (পিএসএফ) গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের পর ১৯৯১ সালে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) নামে নামকরণ করা হয়। সংসদীয় ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের পর এটির প্রাথমিক কাজ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য ভিআইপিদের সুরক্ষা দেওয়া।

 

সর্বশেষ খবর