শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিউইয়র্কের কাশেম ঢাকায় গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক ও যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেমকে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ বুধবার মধ্যরাতে তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ বলছে, আবুল কাশেম যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সেশন জজ আদালত আবুল কাশেমসহ চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। গ্রেফতার এড়াতে আবুল কাশেম আমিরাত এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে গোপনে ঢাকা ত্যাগের চেষ্টা করেছিলেন।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কুসুম দেওয়ান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মানি লন্ডারিং মামলায় আবুল কাশেমসহ চারজন যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য আদালতের নির্দেশনা ছিল। এজন্য বিমানবন্দরসহ সংশ্লিষ্ট জায়গায় তথ্য পাঠানো হয়। এ তথ্যের ভিত্তিতেই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বুধবার মধ্যরাতে আমেরিকা যাওয়ার সময় আবুল কাশেমকে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করে। তিনি কারাগারে রয়েছেন। রবিবার তার রিমান্ড শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছেন, প্রতারণার শিকার প্রায় ৩ হাজার গ্রাহকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে প্রমাণ মেলায় ৩১ মে এ চারজনসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার আল মামুন। সিআইডির ফাইন্যানশিয়াল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুজ্জামান মামলাটির তদন্ত করছিলেন। এ মামলায় ই-কমার্স কোম্পানি ‘আলেশা মার্টের’ চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর আলম শিকদারসহ যে চারজনের বিদেশযাত্রায় আদালত নিষেধাজ্ঞা দেন তাদেরই একজন আবুল কাশেম। এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালকের পদ পাওয়ার জন্য এবং শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে হাজারো গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া ১০০ কোটি টাকা মঞ্জুর আলম ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে দিয়েছিলেন। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া বাকি দুজন হলেন আলেশা মার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মঞ্জুর আলমের স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরী এবং আলেশা মার্টকে মোটরসাইকেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এস কে ট্রেডার্সের মালিক মো. আল মামুন। আবুল কাশেম গ্রেফতার হলেও অন্যরা পলাতক। এ চারজন ছাড়াও প্রতিষ্ঠান হিসেবে আলেশা মার্ট, আলেশা হোল্ডিং, আলেশা কার্ড, আলেশা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভিস, আলেশা টেক, আলেশা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, আলেশা রাইড, আলেশা এক্সপোর্ট ইমপোর্ট, আলেশা ফার্মেসি, আলেশা অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। মামলায় বলা হয়েছে, ‘অনুসন্ধানকালে সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্য, বাংলাদেশ ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ থেকে ব্যাংকিং তথ্য, বিভিন্ন সেলার ও অভিযুক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ নেওয়া হয়।’ প্রসঙ্গত, পিপলস ব্যাংকের অনুমোদন লাভের চিঠি পাওয়ার পর মূলধন সংগ্রহে চেয়ারম্যান আবুল কাশেম অনিয়ম করেন। এমনকি বিধি অনুযায়ী মূলধনের বিপরীতে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন আরেক ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের মাধ্যমে; যা ছিল একেবারেই বেআইনি ও প্রতারণার শামিল। আবুল কাশেমের গ্রেফতারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

সর্বশেষ খবর