মঙ্গলবার, ২৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ

হত্যা মামলা ল্যাবএইডের ছয় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

আদালত প্রতিবেদক

ভুল চিকিৎসায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাহসিন হোসাইনের মৃত্যুর অভিযোগে ধানমন্ডির ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ছয় চিকিৎসকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম ফারাহ দিবা ছন্দা এ আদেশ দেন। এর আগে নিহত তাহসিনের বাবা মনির হোসেন বাদী হয়ে আদালতে এ মামলা করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী তানভীর আহমেদ সজীব সাংবাদিকদের জানান, বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদালত রাজধানীর ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আসামিরা হলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল এবং ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সাইফুল্লাহ, সহকারী সার্জন ডা. মাকসুদ, ডা. সাব্বির আহমেদ, ডা. মোশারফ, ডা. কনক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম ও ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার (ধানমন্ডি) মো. শাহজাহান। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বাদীর ছেলে তাহসিন অসুস্থ হলে গত ২৭ মার্চ ল্যাবএইডে ডা. সাইফুল্লাহ চিকিৎসা দেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। চিকিৎসক জানান, তার অবস্ট্রাক্টিভ স্মল গাট বা নাড়ির প্যাঁচ রয়েছে, যার কারণে তার পেটে ব্যথা এবং মল ত্যাগ করতে পারছে না। দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হবে। পরে গত ২৮ মার্চ অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর তাহসিনের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। কারণ জানতে চাইলে ডা. মাকসুদ বাদীকে জানান, অস্ত্রোপচার সফল হয়নি। রোগীকে সুস্থ করতে হলে আবার অপারেশন করতে হবে। এরপর ৬ এপ্রিল দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করেন ডা. সাইফুল্লাহ। তখন রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসা চলার পর গত ২৩ জুন ভিকটিমের মৃত্যু হয়। তিন মাসে তাকে ১৪৪ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। চিকিৎসা ব্যয় হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায় ২৭ লাখ টাকা বিল করে। এর মধ্যে ১০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে হাসপাতাল থেকে তার সন্তানের লাশ নিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। এদিন তাহসিনের বাবা মনির হোসেন বলেন, ‘আমি ডা. সাইফুল্লাহকে অনেকবার জিজ্ঞেস করছি আমার ছেলের সমস্যা কী? কিন্তু উনি কখনই সঠিক করে কিছুই বলতে পারেননি। অথচ তার দুবার অপারেশন করা হয়েছে। তিনি যে আমার ছেলের ভুল চিকিৎসা করেছেন, তা ১০০ ভাগ নিশ্চিত। এ সময়ে আমার ছেলেকে ১৪৪ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। আমি প্রথম অপারেশনের পর এখান থেকে রিলিজ নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ রোগীকে ছাড়পত্রও দেয়নি। চিকিৎসার নামে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ ও ওই চিকিৎসকরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই, যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।

সর্বশেষ খবর