মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
পাঁচ মেয়রের শপথে প্রধানমন্ত্রী

সিটি নির্বাচন নিরপেক্ষতা প্রমাণ করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাম্প্রতিক সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোয় প্রমাণ হয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হতে পারে এবং জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে পাঁচ সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়রদের শপথ পড়ানো শেষে তিনি এ কথা বলেন।

দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হয় মেয়রদের শপথবাক্য পাঠ। প্রধানমন্ত্রী সকালে গাজীপুরের মেয়র জায়েদা খাতুন, খুলনার তালুকদার আবদুল খালেক ও বরিশালের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত) এবং দুপুরে রাজশাহীর এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সিলেটের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে শপথবাক্য পাঠ করান। মেয়রদের মতোই দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হয় পাঁচ সিটির সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ অনুষ্ঠান। তাদের শপথ পড়ান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য।

শপথবাক্য পড়ানো শেষে মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকার কারণে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোট দিচ্ছে। আমরা প্রমাণ করেছি, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ভোটাধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণকে সেবা প্রদানের আকাক্সক্ষা পূরণে কাজ করে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাঁর সরকার শুধু নগরীতেই নয়, তৃণমূলেও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকার দিয়েছে। তিনি শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্যসেবার সার্বিক উন্নয়নের কথা সংক্ষেপে তুলে ধরেন। নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখুন।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত চক্র সন্ত্রাস ও দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। বিএনপি সরকার বাংলাদেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ প্রত্যক্ষ করেছিল যখন বঙ্গবন্ধু তৎকালীন মহকুমাগুলোকে জেলায় পরিণত করেছিলেন এবং জেলাগুলোর সার্বিক উন্নয়ন তদারকি করার জন্য জেলা গভর্নর নিয়োগ করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীকে আধুনিক, সুন্দর ও পর্যটননগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রাজশাহী সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ জানান। তিনি রাজশাহী ও সিলেটের আরও উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে সিলেট ও রাজশাহীতে নিরক্ষরতা ও বেকারত্ব দূর করতে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান। দেশের প্রতিটি প্রান্তে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বিনামূল্যে ঘর দিচ্ছে। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।

গাজীপর, খুলনা ও বরিশালের সিটি মেয়রদের শপথবাক্য পাঠ শেষে এ তিন সিটি করপোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ডের ১৭৭ জন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরদের শপথ পড়ানো হয়।

এরপর দুপুরে রাজশাহী ও সিলেট সিটি মেয়রের শপথবাক্য পাঠ শেষে এ দুই সিটির সাধারণ ওয়ার্ডের ৭৬ জন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররাও একই স্থানে শপথ নেন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৪০ জন ও সিলেটের ৩৬ জন কাউন্সিলর।

সর্বশেষ খবর