বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

পুলিশের নিরপেক্ষতার গ্যারান্টি চায় ইসি

আশ্বাস দিলেন ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে সুষ্ঠু ও পক্ষপাতহীন ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে পুলিশ বাহিনী ‘শতভাগ নিরপেক্ষভাবে’ দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। তিনি বলেছেন, ১০০ ভাগ গ্যারান্টি দিলাম। ১৭ জুলাইয়ের নির্বাচন দেখেন, আমাদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ পান কিনা। যদি না পান, তখন বলবেন, আমি ডিএমপি কমিশনার হিসেবে নাকে খত দিয়ে চলে যাব। গতকাল সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা সভা হয়। বৈঠকে দুই নির্বাচন কমিশনার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন সেখানে। আগামী ১৭ জুলাই এ উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আড়াই ঘণ্টার বৈঠক শেষে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় আরও ৭৫টি ভোট রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার ভোট হবে ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপারে। আমাদের বার্তা একটি সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন করা। পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি শতভাগ আস্থা রয়েছে আমাদের। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার গোলাম ফারুক বলেন, আমাদের নিরপেক্ষতা প্রমাণের জায়গা শতভাগ থাকবে। আমি ১০০ ভাগ গ্যারান্টি দিলাম। ১৭ জুলাইয়ের নির্বাচন দেখেন, আমাদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ পান কিনা। যদি না পান, তখন বলবেন, আমি ডিএমপি কমিশনার হিসেবে নাকে খত দিয়ে চলে যাব। ইসি যে ধরনের সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে চায়, তাতে পুলিশের তরফ থেকে সব সময় সহযোগিতা থাকবে বলে মন্তব্য করেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘ভোট নির্ভর করে জনগণের ওপর। প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারের ওপর। আমাদের কাজ হলো কেন্দ্রের পুরো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।

সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে সব এলাকায় সমান গুরুত্ব দেবেন জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিবেচনা করব কোথায় ঝুঁকি বেশি, কোথায় ঝুঁকি কম। সে হিসাবে ফোর্স মোতায়েন কোথাও কমবেশি হবে। ডিএমপির সক্ষমতা রয়েছে। এ ছোট একটি উপনির্বাচনে মোতায়েনের জন্য যথেষ্ট ফোর্স রয়েছে, দক্ষতা রয়েছে। ইসির চাহিদা মোতাবেক অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে যা যা করণীয় সব ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’

রাজধানী ছিনতাইকারীমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে : ঈদের বন্ধে রাজধানীতে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঈদের আগেই অনেক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছিলাম। কিন্তু এরপরও দুঃখজনকভাবে বিষয়গুলো ঘটেছে। পুলিশ এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। রাজধানীকে ছিনতাইকারীমুক্ত না করা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। গতকাল রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিনতাইকারীর হামলায় আহত ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সহকারী প্রযোজক রাকিবুল হাসান রানাকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ কনস্টেবল মনিরুজ্জামানকে হত্যার ঘটনায় আমরা সবাইকে গ্রেফতার করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক রানাকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- সোহেল ও ইউসুফ। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দুটি চাপাতি ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। আরেক আসামি নজরদারিতে আছে, তাকেও যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হবে। সাংবাদিক রানার ওপর হামলাকারী সোহেল পাঠাও চালক ও ইউসুফ ইলেকট্রিশিয়ান। তারা নিজেদের পেশার পাশাপাশি ছিনতাইয়ে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে গত কয়েকদিনে ১৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশের ডাটাবেজ অনুযায়ী, ঢাকায় প্রায় ৬ হাজার ছিনতাইকারী আছে, ডাটাবেজে তথ্য থাকলেও ছিনতাইকারীরা কেন বার বার ফিরে আসে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি প্রধান বলেন, প্রত্যেকে গ্রেফতার হয়েছে বলেই আমাদের ডাটাবেজে নাম আছে। আমরা প্রত্যেককে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। এরপর আদালতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা জামিনে বের হয়ে আসে। এখন আইন সংশোধনের প্রয়োজন আছে কি না বা করণীয় বিষয়ে অপরাধবিজ্ঞানী বা সমাজবিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন। আমাদের কাজ গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা। ছিনতাইকারীমুক্ত করতে যত কঠোর হওয়া দরকার আমরা হব, যত পরিশ্রম আমাদের করা প্রয়োজন আমরা করব।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর