বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

আইএমএফ চায় আর্থিক নীতিতে সরাসরি প্রভাব

ঢাকায় দিনভর ব্যস্ত প্রতিনিধি দল

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইএমএফ চায় আর্থিক নীতিতে সরাসরি প্রভাব

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দেশের আর্থিক খাতে আরও সংস্কার চায়। সরকারের আর্থিক নীতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলতে চায় আইএমএফ। সংস্থাটি মনে করে, মূল্যস্ফীতি কমাতে হলে রেপোর সুদহার বাড়াতে হবে (বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের বিনিময়ে যে টাকা ধার দেয় সেটাকে রেপো বলে)। রেপোর সুদ বাড়িয়ে দিলে মার্কেটে টাকার প্রবাহ কমে আসবে, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে আইএমএফ। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ সুদে টাকা ধার দেয়, যা রেপো রেট হিসেবে পরিচিত।

গতকাল ঢাকা সফরের প্রথম দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থবিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে টানা বৈঠক ও এক কর্মশালায় এসব বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেছে আইএমএফ। অবশ্য অর্থবিভাগের অনেক কর্মকর্তাই তাদের এমন মতামতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এটাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আর্থিক নীতিতে হস্তক্ষেপের শামিল বলে তারা মনে করেন। অর্থবিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে ঢাকা সফরের প্রথম দিনে ব্যস্ততম সময় পার করে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের (কারিগরি) মিশন। গতকাল ঢাকায় নেমেই সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেয় প্রতিনিধি দলটি। সকালে অর্থবিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকের মধ্য দিয়ে দিন শুরু করে একই বিভাগের সঙ্গে মধ্যমেয়াদি আর্থিক কাঠামোসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে একটি কর্মশালার মাধ্যমে প্রথম দিন শেষ করে।

চলমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচিতে আর্থিক খাতে ৩৮ ধরনের সংস্কারের শর্ত দেয় আইএমএফ। এবারের সফরে এর সঙ্গে আরও কয়েকটি নতুন জায়গায় সংস্কারের কথা বলছে সংস্থাটি। এর মধ্যে শেয়ারবাজার, বন্ড মার্কেট, রেপো, রিভার্স রেপো খাতের সংস্কার চেয়েছে আইএমএফ। বেসরকারি ব্যাংকের কর্তাদের সঙ্গেও তারা বৈঠক করবেন। ব্যাংক-বীমা, ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ডসহ বিভিন্ন আর্থিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার নানা ধরনের সংস্কারে হাত দিয়েছে। এরই মধ্যে সরকারের নেওয়া এসব সংস্কারে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। আইএমএফকে খুশি করতে সার, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে, ভর্তুকি কমানো হয়েছে, করছাড় কমানো হয়েছে। রাজস্ব বাড়াতে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও মুদ্রানীতি নমনীয় করে সুদহার বাড়ানো হয়েছে। মৌলিক এসব সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। সূত্র জানায়, ঢাকা সফরের প্রথম দিনের প্রথম থেকে শেষ ভাগে অর্থবিভাগের সঙ্গে একটি ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে জাতীয় সঞ্চয়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বৃদ্ধি ও সরকারের মধ্যমেয়াদি বাজেট ফ্রেমওয়ার্ক বিষয়ে বিভিন্ন রকমের নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। এতে বাজেট বাস্তবায়ন ও বাজেট কাঠামোর সংস্কারের বিষয়ে বিস্তারিত ফর্মুলা তুলে ধরেন আইএমএফের প্রতিনিধিরা।

সর্বশেষ খবর