শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রধানমন্ত্রীর ডাকে গণভবনে তামিম, থাকবেন অধিনায়ক, খেলবেন এশিয়া ও বিশ্বকাপ

অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার

আসিফ ইকবাল

অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার

প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে গতকাল সস্ত্রীক গণভবনে যান তামিম ইকবাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাজমুল হাসান পাপন ও মাশরাফি বিন মর্তুজা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন তামিম ইকবালকে। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে সঙ্গে নিয়ে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ সময় সাক্ষাতের পর অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন তামিম। অবসর ভেঙে খেলায় ফিরলেও খেলবেন না আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ। তার পরিবর্তে সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেবেন লিটন দাস। পিঠের ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে তামিম ক্রিকেটে ফিরবেন দেড় মাস পর। ফিরবেন ‘হাইব্রিড’ এশিয়া কাপে অধিনায়ক হয়ে। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের সময় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ছাড়াও উপস্থিত  ছিলেন তামিমের স্ত্রী। গণভবন থেকে বেরিয়ে বিসিবি সভাপতি মিডিয়ার মুখোমুখিতে তামিমের অবসর ভেঙে দেড় মাস পর ক্রিকেটে ফেরার কথা জানান। অবসর প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে তামিম বলেন, ‘আজকে (শুক্রবার) দুপুরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে উনার বাসায় দাওয়াত করেছেন। অনেকক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি। উনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন খেলায় ফিরে আসতে। আমি আমার অবসর এই মুহূর্তে ফিরিয়ে নিচ্ছি।’ বৃহস্পতিবার সবাইকে চমকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি যখন ছলছল চোখে অবসরের ঘোষণা দেন, তখন তার কান্না ব্যথিত করে সবার মন। ১৬ বছর দেশকে সার্ভিস দেওয়া তামিম অবসরের ঘোষণায় বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি হুট করে নিইনি। অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম।’ অনেক দিন ধরে ভাবলেও ঘনিষ্ঠজনরাও জানতেন না কবে তিনি খেলা ছাড়বেন। তবে ক্রিকেটপাড়ায় একটি গুঞ্জন ছিল, বিশ্বকাপে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে অবসর নেবেন টাইগার অধিনায়ক। সেই ভাবনাতে এগোচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু পুরনো পিঠের ব্যথা তাকে বেশ অনেক দিন ধরে ভোগাচ্ছে। এতে করে বিশ্রাম নিয়ে খেলতে হচ্ছিল তাকে। কিন্তু টাইগার কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহের এই বিষয়টি পছন্দ হচ্ছিল না। টাইগার কোচ শতভাগ ফিট ক্রিকেটারকে নিয়ে স্কোয়াড সাজাতে চান। এ নিয়ে তামিমের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হয়ে ওঠে। বিষয়টি জটিল হয়ে ওঠে আফগানিস্তান সিরিজ শুরুর আগে তামিমের একটি মন্তব্যের পর। তামিম সংবাদ সম্মেলনে নিজের ফিটনেস প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, প্রথম ম্যাচ খেলার পর বুঝবেন তার ফিটনেস কেমন। এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ খেলার। তামিমের এমন মন্তব্য মেনে নিতে পারেননি কোচ এবং বিসিবি সভাপতি। বিসিবি সভাপতি মিডিয়ায় পাল্টা উত্তরে জানান, এটা ঘরোয়া ক্রিকেট নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। শতভাগ ফিটনেস নিয়ে খেলতে হবে। তামিম বিসিবি সভাপতির এমন হার্ডলাইনের কথা মেনে নিতে পারেননি। এ ছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে কোচের সঙ্গে তার যে শীতল সম্পর্ক চলে আসছে, সেসব চাপ সামাল দিতে না পেরে অবসরের ঘোষণা দেন। তামিমের অবসরের ঘোষণায় বিস্ময় প্রকাশ করেন বিসিবি সভাপতি। তিনি যোগাযোগের জন্য মেসেজ করেন টাইগার অধিনায়ককে। মেসেজে তিনি আফগানিস্তান সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ খেলার জন্য বলেন। সিরিজ শেষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলেও জানান। কিন্তু তামিম কোনো উত্তর দেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিসিবি সভাপতি ও কোচ হাতুরাসিংহেকে নিয়ে নানান ট্রল করতে থাকেন আমজনতা। তামিম নিজ অবস্থানে অনড় থাকেন। তবে মাশরাফির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। প্রধানমন্ত্রী মাশরাফির সঙ্গে কথা বলেন তামিম ইস্যু নিয়ে। এরপরই তামিম দুপুর ১টায় ঢাকায় আসেন। ৩টায় মাশরাফির সঙ্গে গণভবনে যান। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন দুই ক্রিকেটার। আধা ঘণ্টা পর বিসিবি সভাপতিকে ডেকে পাঠান গণভবনে।

সর্বশেষ খবর