শিরোনাম
সোমবার, ১০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
উত্তপ্ত হচ্ছে রাজপথ

পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে আওয়ামী লীগ

বিএনপিকে আন্দোলনের সুযোগ দিলেও ফাঁকা মাঠ দেবে না আওয়ামী লীগ। ধারাবাহিকভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবে দলটি। বিভিন্ন নামে লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে তারা। আওয়ামী লীগ ছাড়াও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও পৃথক কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় থাকবে। ১২ জুলাই রাজধানীতে সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। ওইদিন বিএনপি-জামায়াতের ‘সন্ত্রাস-নৈরাজ্যে’র প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, বিএনপি-জামায়াত ততই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।

তারা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সন্ত্রাস করতে চায়। কিন্তু সরকার তাদের সন্ত্রাস করার সুযোগ দেবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথেই তাদের প্রতিহত করবে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক আগে থেকেই বছরব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যখনই সময়-সুযোগ হচ্ছে তখনই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। আমরা বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছি না, আমরা নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকছি। সরকারের উন্নয়নগুলো তুলে ধরছি, পাশাপাশি আগামীতে ক্ষমতায় আসলে কী করব সেগুলো জনগণকে জানাচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি কর্মসূচি পালন করুক, আমরা বাধা দেব না। কিন্তু সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করলে সরকার ছাড় দেবে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে। আমরা রাজনৈতিকভাবে তাদের মোকাবিলা করব। দলের একাধিক নেতা জানান, বিএনপি ও তার শরিকদের মাঠের রাজনীতিতে কিছুটা জায়গা দিলেও এটাকে কোনোভাবেই বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যেতে দেবে না আওয়ামী লীগ। বিরোধী জোট যাতে রাজপথ তাদের দখলে নিতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক রয়েছেন দলটির নেতারা। এ কারণেই গত কয়েক দিনে বিএনপি মাঠের রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থানের যে জানান দিচ্ছে, তার লাগাম টানতে চায় সরকারি দল। রাজনীতির মাঠ নিজেদের দখলে রাখতে ইতোমধ্যে কর্মসূচিও দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল সিলেটে বিএনপি তারুণ্যের সমাবেশ করেছে। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগও পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ করেছে। যুবলীগের কর্মসূচিতেও তারুণ্যের সমাবেশে উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এভাবে ছাত্রলীগও ছাত্র সমাবেশ করবে দেশব্যাপী। আগামী বুধবার সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে রাজধানীতে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। বিকাল ৩টার দিকে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই দিন রাজধানীতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সমাবেশ থেকে বিএনপি সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা দেবে বলে জানা গেছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। শান্তি সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী এবং সঞ্চালনা করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। এ ছাড়া সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপি যদি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে তাহলে আমরা তাদের বাধা দেব না। এটা আমাদের অঙ্গীকার। কিন্তু তারা যদি হুমকি দেয়, হত্যাকান্ড ঘটানোর মতো ভাষায় বক্তব্য দেয়, মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, তাহলে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করা হবে। আমরা কোনো খুনির কাছে মাথানত করব না। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাদের প্রতিহত করব।’ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা কোনো পাল্টা কর্মসূচিতে যাচ্ছি না। বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবেই আগামী ১২ জুলাই ঢাকায় শান্তি সমাবেশ ডাকা হয়েছে। ওইদিন কেউ ঢাকায় নৈরাজ্য-অরাজকতা করতে চাইলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথেই প্রতিহত করা হবে।

সর্বশেষ খবর